ব্রাসেলসের হামলাও প্যারিস স্টাইলের, তৃতীয় সন্দেহভাজনের বিমানবন্দর ছাড়া ‘পরিকল্পিত’

সাদা কোট আর হ্যাট পরা তৃতীয় এ সন্দেহভাজনের খোঁজে তল্লাশি চলছেব্রাসেলসের জাভেনতাম বিমানবন্দর আর মালবিক মেট্রো স্টেশনে বোমা হামলা ও হতাহতের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে তিন সন্দেহভাজন শনাক্ত হলেও তাদের দুজন আত্মঘাতী ছিলেন। আর তৃতীয়জনকে হামলার ভেতরে বোমাভর্তি স্যুটকেস ফেলেই ব্রাসেলস বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে। তিনি পরিকল্পিতভাবে বিমানবন্দর ছেড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্তকারীরা বলছেন, হাতের দস্তানায় বিস্ফোরক যন্ত্র লুকিয়ে রেখে প্যারিস স্টাইলে এই হামলা করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার দুই জায়গায় হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের প্রাণহানি এবং প্রায় ২৫০ জন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। বেলজিয়ামে নিহতদের স্মরণে চলছে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক। এরইমধ্যে সশস্ত্র সুন্নিপন্থী সংগঠন আইএস হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা জানান, ফুটেজে তিন সন্দেহভাজন হামলাকারীকে ব্যস্ত চেক ইন এলাকার দিকে বোমাভর্তি স্যুটকেস টেনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এর আগে একটি ট্যাক্সিতে করে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন তারা। এরমধ্যে দুই সন্দেহভাজন তাদের বাম হাতে কালো রংয়ের দস্তানা পরে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুজন তাদের নখের আবরণে ঢাকা ডিভাইস ব্যবহার করে বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছেন।
যে দুই ব্যক্তির স্যুটকেসভর্তি বোমা সফলভাবে বিস্ফোরিত হয় তারা তাদের বাম হাতের দস্তানায় বিস্ফোরণের যন্ত্রটি লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আর এ একই কায়দায় গত নভেম্বরে প্যারিসে হামলা চালানো হয়েছিল।

সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত হওয়া দুই আত্মঘাতী
মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, সিসিটিভির ফুটেজ বলছে তৃতীয় সন্দেহভাজন আগেই তার বোমাটি পরিত্যাগ করেছেন। বিমানবন্দর থেকে তার বের হয়ে যাওয়া ‘পরিকল্পিত’ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কেউ কেউ আবার বলছেন, তৃতীয় সন্দেহভাজন তার বোমাটি বিস্ফোরিত না করতে পেরে তা রেখেই বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে গেছেন।
নৃশংসতা হওয়ার মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগে  সন্দেহভাজনরা তাদের স্যুটকেস চেক করতে দেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় মেয়র ভারমেইরেন। তিনি বলেন, ‘তারা একটি ট্যাক্সিতে করে স্যুটকেসগুলো নিয়ে এসেছিলেন। তারা স্যুটকেসগুলো ট্রলিতে রাখেন, সেখানে প্রথম দুটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তৃতীয় ব্যক্তিও স্যুটকেসটি ট্রলিতে রাখেন। তবে সেটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় তিনি খানিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।’

ব্রাসেলসের বিভিন্ন জায়গায় হামলার সময়ক্ষণ
এদিকে ট্যাক্সিচালক পুলিশের কাছে দাবি করেছেন যে তিনি না জেনেই হামলাকারীদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। সন্দেহভাজনদের স্যুটকেসগুলো ধরে নামানোর জন্য সহায়তা করতে গেলে সন্দেহভাজনরা তাদের স্যুটকেস স্পর্শ করতে নিষেধ করেন।
এরইমধ্যে তৃতীয় সন্দেহভাজনের ছবিযুক্ত ‘ওয়ান্টেড’ পোস্টার ইস্যু করেছে বেলজিয়ামের পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সে সময় একটি বাড়ি থেকে নখ বোমা, আইএস-এর পতাকা আর বেশ কিছু ‘রাসায়নিক উপকরণ’ উদ্ধার করা হয়। সূত্র: বিবিসি, গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল
/এফইউ/বিএ/