ইউরোপীয় জঙ্গিদের সিরিয়ায় পাচার করা হচ্ছে!

nonameইউরোপের দেশগুলো নিজেদের ‘ইসলামি চরমপন্থী’ সমস্যাকে সিরিয়াতে রপ্তানি করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা। প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের কাছে এ নিয়ে বেশকিছু তথ্য-প্রমাণও উপস্থাপন করেছে তুরস্কের কর্মকর্তারা।
তুরস্কের কর্মকর্তারা গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, জিহাদিদের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তুরস্কের উপস্থাপিত বেশকিছু তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে গার্ডিয়ান জানায়, আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও অনেক বিদেশি যোদ্ধাই ইউরোপ ছাড়ছেন। এক্ষেত্রে তারা নিজেদের লাগেজের মধ্যে বিভিন্ন অস্ত্র এবং বিস্ফোরকও নিয়ে যাচ্ছেন।
তুরস্ক অভিযোগ করছে, অনেক ক্ষেত্রে এদের গ্রেপ্তার করে ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করার পরও তাদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এমনকি বিদেশি যোদ্ধাদের সাথে তাদের সম্পর্ক আছে বলে সতর্ক করার পরও ব্যবস্থা নিচ্ছে না ইউরোপের দেশগুলো। ইউরোপে আইএসের সর্বশেষ ব্রাসেলস হামলার আগেই গার্ডিয়ানকে এসব কথা জানান তুরস্কের কর্মকর্তারা।
তুর্কি এক জ্যৈষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ, তারা কেন ওইসব লোককে সিরিয়া আসতে দিতে চায়। তারা এটা করে কারণ তারা চায়, ওইসব লোক (সন্ত্রাসীরা) তাদের দেশে না থাকুক। আমার মন হয়, হামলার ঘটনাগুলো পরপর ঘটার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে তারা ছিল চুপচাপ এবং নজরদারিও বন্ধ করে দিয়েছিল।’

বুধবার বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনের হামলার নেপথ্যে দেশটির কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েফ এরদোয়ান। তিনি অভিযোগ করেন, ব্রাসেলসের বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় জড়িত দুই সহোদরের একজন তুরস্কে আটক হয়েছিলেন এবং পরে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে ‘বিদেশী সন্ত্রাসবাদী’র বিষয়ে সতর্কও করা হয়। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনও সতর্কতা অবলম্বন করেননি। তিনি আঙ্কারায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমরা ১৪ জুলাই ২০১৫ তারিখে বেলজিয়াম দূতাবাসকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একজন ‘বিদেশী সন্ত্রাসবাদী’র বিষয়ে আমাদের হুশিয়ারি সত্ত্বেও বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ তার সাথে সন্ত্রাসবাদের কোনও সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারলো না।’

ব্রাসেলসে হামলার পর ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার
প্যারিস হামলার আত্মঘাতি ওমর ইসমাইল মোস্তফার ব্যাপারেও ফ্রান্সকে আগেই সতর্ক করেছিল তুরস্ক। তবে ফ্রান্স তা আমলে নেয়নি। পরে প্যারিস হামলায় অংশ নেয় ওমর। এছাড়া আরো বেশকিছু জিহাদির ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোকে আগেই সতর্ক করা হলেও তাদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ইউরোপের দেশগুলো।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে বিমানবন্দর ও মেট্রো স্টেশনে  পৃথক বোমা হামলায় অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০ জন মেট্রো স্টেশনের হামলায় এবং ১৪ জন বিমানবন্দরে হামলার ঘটনায় নিহত হন। এছাড়াও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান 

/বিএ/