কঙ্গোতে হামলাকারী এম২৩ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত রুয়ান্ডা: জাতিসংঘ

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এম ২৩ বিদ্রোহীদের আগ্রাসনে রুয়ান্ডার দায় খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ দল। তাদের একটি গোপন প্রতিবেদনে বলা হয়, কঙ্গোর খনিজসমৃদ্ধ এলাকার দখল ও সেখানে রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির মানসে বিদ্রোহীদের ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি রেখেছিল রুয়ান্ডা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

মে মাসের শুরুর দিকে প্রতিবেদনটি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কঙ্গো বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা কমিটিতে দাখিল করা হয় এবং শিগগিরই তা প্রকাশিত হবে বলে জানা গেছে।

প্রতিবেদনটি যাচাই করে রয়টার্স বলেছে, রুয়ান্ডার তত্ত্বাবধানে এম ২৩ সদস্যদের প্রশিক্ষণ হয়েছে এবং তারা আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে। এসবের মধ্যে শত্রুপক্ষের বিমান নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম অস্ত্রও ছিল।

চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের দুটি প্রধান শহর গোমা ও বুকাভু দখলে নেয়। কঙ্গো, জাতিসংঘ ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর অভিযোগ, রুয়ান্ডা এই বিদ্রোহীদের সরাসরি সহায়তা করছে।

রুয়ান্ডা বরাবরই এম২৩-কে সহায়তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, কেবল আত্মরক্ষার্থে কঙ্গোর বাহিনী ও ১৯৯৪ সালের গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত হুথু গোষ্ঠী এফডিএলআরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে তারা।

তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুয়ান্ডার সামরিক সহায়তার মূল লক্ষ্য এফডিএলআর নয়, বরং ছিল বাড়তি ভূখণ্ড দখলের কৌশলগত আকাঙ্ক্ষা।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এম ২৩ নেতারা রুয়ান্ডার গাবিরো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অবস্থান করেছেন এবং নাশো ও গাকো সামরিক ঘাঁটিতে বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরেজমিনে খোঁজখবর নেওয়ার সময় তারা এম২৩-এর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আনুমানিক এক থেকে দেড় হাজার সক্রিয় রুয়ান্ডার সেনা দেখেছেন এবং সীমান্তের কাছে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন ছিল।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুয়ান্ডা-কঙ্গো শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে মধ্যস্থতা করছেন, যার আওতায় অঞ্চলটিতে শত শত কোটি ডলারের পশ্চিমা বিনিয়োগ হতে পারে। ওয়াশিংটনে শুক্রবার  আয়োজিত এক বৈঠকে রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, চুক্তি ভঙ্গ হলে অত্যন্ত কঠোর আর্থিক ও অন্যান্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এছাড়া, কাতারও এক সমান্তরাল শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতা করছে, যেখানে কঙ্গো সরকার ও এম ২৩ প্রতিনিধিদল অংশ নিচ্ছে।