জাপানে মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জলসীমায় সম্ভাব্য ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে জনগণকে সতর্ক করেছে দেশটির সরকার। শনিবার (৫ জুলাই) ওই একই বিবৃতিতে অনুরোধ করা হয়, মারাত্মক দুর্যোগের বিষয়ে ভিত্তিহীন ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কেউ যেন আতঙ্কিত না হন। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ অঞ্চলে অবস্থিত জাপান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। তবে সম্প্রতি একটি মাংগাকে (জাপানি কমিক) কেন্দ্র করে জনগণের মনে বাড়তি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
আলোচিত মাংগা 'দ্য ফিউচার আই স' (আমি যে ভবিষ্যত দেখেছি) ১৯৯৯ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালে এটি পুনর্মুদ্রিত হয়।
প্রথম সংস্করণে ২০১১ সালের মার্চে একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। ওই মাসেই জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে ভয়াবহ ভূমিকম্প, সুনামি এবং পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে, যাতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। ওই গল্পে ২০২৫ সালের ৫ জুলাই একটি বিশাল প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনাও উল্লেখ আছে। এই নিয়েই যতো আতঙ্ক।
দেশটির প্রধান দ্বীপ কিউশুর সর্বদক্ষিণের কাগোশিমা প্রিফেকচারে গত দুসপ্তাহে হাজারের বেশি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক কম্পন এতোটাই জোরালো ছিল যে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকাটাই দায় হয়ে পড়ে। পরদিনই আগাম নিরাপত্তার জন্য স্থায়ীদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।
শনিবার ৫ দশমিক ৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশটির জলবায়ু সংস্থার ভূমিকম্প ও সুনামি পর্যবেক্ষণ বিভাগের পরিচালক আয়াতাকা এবিতা বলেন, আমাদের বর্তমান বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার ভিত্তিতে কোনও ভূমিকম্পের পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষু স্থান-কাল-মাত্রা অনুমান করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তবে সবার প্রতি আমাদের অনুরোধ, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, এই মাংগার গল্প পর্যটকদের মনে বেশ মারাত্মক ভীতি সঞ্চার করেছে। গত বছর মে মাসের তুলনায়, এ বছরের মে মাসে হংকং থেকে আসা পর্যটক ১১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। অথচ চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিকে রেকর্ড সংখ্যক ৩৯ লাখ মানুষ বেড়াতে এসেছিলেন।
দ্য ফিউচার আই স'এর মাংগাকা (মাংগা আকিয়ে) রিয়ো তাতসকি আতঙ্ক প্রশমনের চেষ্টায় তার প্রকাশকের মাধ্যমে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। সেখানে বলা হয়, তিনি কোনও 'প্রফেট' (স্রষ্টা প্রেরিত দূত) নন।