সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি পোস্টের মাধ্যমে থাই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ উঠেছে থিরাওয়ান চারোয়েনসুক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। তার অপরাধ, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও ইংলাক সিনাওয়াত্রার তরফে নববর্ষের শুভেচ্ছাসম্বলিত একটি লাল পাত্র হাতে নিয়ে ছবিটি তুলেছেন।
মঙ্গলবার থিরাওয়ান চারোয়েনসুক নামের ৫৭ বছর বয়সী সে নারীকে সামরিক আদালতে তলব করা হয় বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে। পরে ১ লাখ বাথ সমমূল্যের মুচলেকা দিয়ে জামিন পান তিনি।
সংক্রান উৎসব নামে পরিচিত থাই নববর্ষ প্রতি বছরের এপ্রিলে উদযাপিত হয়ে থাকে। সে সময় বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করে চলে জল ছোড়াছুড়ি। থিরাওয়ানের হাতের তালুতে ধরে রাখা লাল বৌলটিতে পানির উপস্থিতি বোঝানো হয়েছে। বৌলটিতে একটি বার্তা লেখা আছে। ছবিতে সেটি চোখে না পড়লেও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, সেখানে থাকসিনের সাক্ষর রয়েছে। প্লাস্টিকের বৌলটি মূলত সিনাওয়াত্রাদের সমর্থকরা প্রচারণার কাজে ব্যবহার করে থাকেন। একইসঙ্গে থাইল্যান্ডের রং ভিত্তিক রাজনীতিতে লাল রংটি সিনাওয়াত্রাদের বলে বিবেচিত। আরেকটি ছবিতে সিনাওয়াত্রাদের ছবিযুক্ত ২০১০ সালের একটি ক্যালেন্ডার ধরে রেখেছেন থিরাওয়ান।
২০০৬ সালে এক অভ্যুত্থানে থাকসিন সিনাওয়াত্রা ক্ষমতাচ্যুত হন। ২০০৮ সালে এক দুর্নীতির মামলায় জেলের সাজা এড়াতে আত্মনির্বাসনে যান থাকসিন। আর ২০১৪ সালে তার বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রাকেও ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে সেনাবাহিনী। তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। দেশটিতে এখন সামরিক শাসন জারি রয়েছে।
মঙ্গলবার সামরিক জান্তার প্রধান প্রায়ুথ চ্যান ওচা বলেন, থিরাওয়ান জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলেছে। থাকসিনের ব্যাপারে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আপনারাই দেখুন, ছবিতে সে লোকটিকেই দেখানো হচ্ছে যিনি আইন ভঙ্গ করেছিলেন।’
থাইল্যান্ডের উপ প্রধানমন্ত্রী জেনারেল প্রাউয়িত ওংসুয়ানও ওই নারীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে সাফাই গান। তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন ওই নারী উত্তেজনা ছড়াননি কিংবা সমাজে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করেননি তাহলে আমাকে বলুন। আমরা কাউকে গ্রেফতার করতে চাই না। কিন্তু সেইসব লোককে তো আমাদের হুঁশিয়ারি মানতে হবে।’
ক্ষমতাচ্যুত বিরোধীপক্ষ, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের জন্য জনসমক্ষে সমর্থন প্রদর্শনকারীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়ে আসছে থাই সেনাবাহিনী। হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্তত ৩৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। সূত্র: গার্ডিয়ান
/এফইউ/