আবহাওয়া সংক্রান্ত 'ভুয়া খবরের' বিরুদ্ধে খড়গহস্ত মিসর

মিসর সরকার জানিয়েছে, আবহাওয়ার খবর দেওয়ার অধিকার সরকার ছাড়া আর কারও নেই। সেহেতু আবহাওয়ার বিষয়ে অন্য কারও খবর দেওয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে আইন পাস করা হবে। দেশটির ‘মেটিওরোলজিকাল এসোসিয়েশন’(ইএমএ) প্রধাণের বরাতে এ খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।730969258

ইএমএ প্রধান ড. আব্দেল আল আহমেদ বলেছেন, আবহাওয়া সংক্রান্ত পূর্বাভাস ও প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে ইএমএ মিসরের একমাত্র অনুমোদিত কর্তৃপক্ষ। তাই আবহাওয়ার বিষয়ে অননুমোদিত খবর ঠেকাতে একটি খসড়া আইন তৈরি করা হয়েছে। আইনটিতে, ‘আবহাওয়া নিয়ে ব্যাখ্যা দিলে, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে সক্ষম অনুমতিহীন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বা আবহাওয়ার খবর নিয়ে কোনও রকম বিভ্রান্তি তৈরি করলে’ অভিযুক্তকে শাস্তি দেওয়ার বিধান রয়েছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে মিসরের আবহাওয়া অস্থিতিশীল। সেখানে ভারী বর্ষণ ও প্রবল ধূলিঝড় হয়েছে। অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও ভারী বর্ষণের কারণে বিত্তশালীদের এলাকা নিউ কায়রোর রাস্তায় পানি জমে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যথেষ্ট প্রস্তুতি না থাকার অভিযোগ উঠেছিল মিসরের ‘অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কন্ট্রোল অথরিটির’ বিরুদ্ধে। সেখানকার কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে।

গার্ডিয়ান লিখেছে, মিসরে সংবাদমাধ্যম ভুয়া খবরের অভিযোগ নিয়ে চাপের মধ্যে রয়েছে। এমন কি যারা সরকারের পক্ষে লেখে তারাও এই অভিযোগ থেকে মুক্ত নয়। দেশটিতে আবহাওয়ার খবর নিয়ে তেমন কোনও ভুয়া খবরের কথা শোনা যায়নি। তবে কখনও কখনও আবহাওয়ার খবর রাজনীতির অংশ হিসেবে সামনে এসেছে।

২০১৫ সালে মিসরে বন্যা হলে মিসরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, অবকাঠামোগত অব্যবস্থাপনার জন্য নয় বরং মুলিম ব্রাদারহুডের ষড়যন্ত্রের কারণেই বন্যা হয়েছে। তার দাবি, মুসলিম ব্রাদারহুড সিমেন্ট দিয়ে নালা বন্ধ করে দেওয়াতে উপকূলীয় শহর আলেক্সান্দ্রিয়াতে ওই বন্যার ঘটনা ঘটে।

তাহরির ইন্সটিটিউটের টিমোথি ই কালদাস মন্তব্য করেছেন, সরকারের আচরণে আবহাওয়ার খবরসহ অন্য সব তথ্যের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাওয়ার মানসিকতাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা এমন তথ্যও নিয়ন্ত্রণ করতে চায় যা বিজ্ঞানীদের অরাজনৈতিক গবেষণার বিষয়।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত মার্চে মিসর সরকার একটি অভিযোগকেন্দ্র খুলেছে। সেখানে নাগরিকরা ফোন করে সরকারকে ভুয়া খবরের বিষয়ে তথ্য দিতে পারে। দেশটির সরকার সাইবার অপরাধ দমনে যে আইন করেছে সেখানেও বলা হয়েছে, মিসরের অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হলে সরকার যে কোনও ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিতে পারবে। এবার সরকার হাত দিয়েছে আবহাওয়ার সংক্রান্ত ‘ভুয়া খবরের’ দিকে।