মিসরে ‘সহযোগিতা করা গুনাহ হয়েছে’ লেখা সাবেক প্রতিমন্ত্রী ‘ভুয়া খবরের’ দায়ে গ্রেফতার

মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাতাহ আল সিসির এক সময়ের সহযোগীকে ভুয়া ‘খবর ছাড়ানোর’ দায়ে গ্রফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের টেলিযোগাযোগ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সম্প্রতি টুইটারে তিনি লিখেছিলেন, সিসিরর পক্ষে কাজ করাটা তার জন্য অনেক ‘বড় গুনাহর’ কাজ ছিল। শনিবার মিসর সরকার তাকে ভুয়া খবর ছড়াবার দায়ে গ্রেফতার করেছে। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডিল ইস্ট আই লিখেছে, মেট্রোর ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে বড় শহরগুলোতে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হওয়ার পরপররই সরকারবিরোধীদের গ্রেফতার করা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে আরও ৪ জন বিরোধী নেতাকে গ্রেফতার করেছে সিসি সরকার। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, সরকারের সমালোচনা স্তব্ধ করে দিতেই তাদের গ্রফতার করা হচ্ছে।Egypt police (AFP)_1

মিসরের তিনটি সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে বিরোধী নেতা হাজিম আব্দেলাজিমকে শনিবার কায়রোতে অবস্থিত তার বাসভবন থেকে ভুয়া খবর প্রকাশ করার সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগে হোসনি মুবারক সরকারের প্রতিমন্ত্রী থাকা আব্দেলাজিম ২০১৪ সালে সিসির নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন। তখন তিনি যুব কমিটির সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে আব্দেলাজিম সিসির বিরুদ্ধে চলে যান এবং এবং সিসির সমালোচনা শুরু করেন। আব্দেলাজিম টুইটারে লিখেছিলেন, সিসির জন্য কাজ করাটা তার জন্য ‘সবচেয়ে বড় গুনাহ।’

মিডিল ইস্ট আই লিখেছে, সাম্প্রতিক সময়ে আরও অনেককে মিসরে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন পুরস্কার জয়ী ব্লগার এবং সাংবাদিক ওয়ায়েল আব্বাস। তাকে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার ও ভুয়া খবর প্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত আরেকজন হলেন হাইথাম মোহামেদিন। তিনি একজন সমাজতন্ত্রী শ্রমিক অধিকার আইনজীবী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে কাজ করেছেন এবং ইন্টারনেটে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পক্ষে কথা বলেছেন।

হোসনি মুবারক পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন ২০১১ সালের যে গণঅভ্যুত্থানের কারণে সেই গণঅভ্যুত্থানের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি শাদি ঘাজালি হার্বের বিরুদ্ধেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়ানোর অভিযোগ করেছিল সরকার। হার্ব আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হন।

মানবাধিকারকর্মীদের ভাষ্য, সিসির শাসনামলে মিসরের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। অপরদিকে সিসির সমর্থকদের দাবি, মিসরের স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে সিসির কঠিন নিরাপত্তা নীতিই দরকার।