গান গাওয়ায় সোমালিয়ায় সুফি আলেমসহ ১৭ জনকে হত্যা

ধর্মীয় আয়োজনে ভক্তিমূলক গান গাওয়ার বিরোধিতা করে সোমালিয়ায় একজন সুফি আলেমসহ তার ১৭ জন অনুসারীকে হত্যা করেছে দেশটির জঙ্গি সংগঠন আল শাবাব। বার্তাসংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, জঙ্গিদের হামলা ঠেকাতে দেশটির নিরাপত্তা রক্ষীরাও ব্যাপক মাত্রায় পাল্টা গুলি চালায়। এতে চার জঙ্গি প্রাণ হারালেও একজনকে আটক করা গেছে।s4.reutersmedia.net

নিহত সুফি আলেমের নাম আব্দিওয়ালি আলি এমি। তার শত শত ভক্ত-অনুসারী। কিন্তু বিতর্কের বিষয় ছিল তার আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার বিষয়টি। তার ও তার অনুসারীদের গান গাওয়ার বিরুদ্ধে ছিল যারা তারা এমন গানকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়েছিল। তাদের দাবি, এসব গান ভক্তিমূলক হলেও ইসলামসম্মত নয়। অন্যদিকে এমির দাবি ছিল, সংগীত ইসলামে নিষিদ্ধ নয়।

সোমবার দুইজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এমির বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সেটি একই সঙ্গে একটি মাজার। বিস্ফোরণের পরপর চারজন বন্দুকধারী এলপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। সোমালিয়ার একজন পুলিশ কর্মকর্তা আহমেদ আওয়াল জানিয়েছেন, মোট ১৮ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন এ হামলায়।

হামলার এক পর্যায়ে সোমালিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে। তাদের পাল্টা গুলিবর্ষণে নিহত হয় তিন হামলাকারী। একজনকে জীবিত অবস্থায় আটক করা সম্ভব হয়েছে। জঙ্গি সংগঠন আল শাবাব এই হামলার দায় শিকার করেছে।

১৯৯১ সালে সেনা শাসনের অবসান হওয়ার পর থেকে সোমালিয়াতে সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্ট মোহামেদ সিয়াদ বারে  ক্ষমতাচ্যুত হলে দেশের যুদ্ধবাজ গোত্রপতিরা হানহানিতে জড়িয়ে পড়ে। দেশটি থেকে সোমালিল্যান্ড ও পুন্টাল্যান্ড নামের দুটি অঞ্চল আলাদা হয়ে যায়। সোমালিয়া কার্যত একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। ২০১২ সালে দেশটিতে জাতিসংঘ সমর্থিত সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠীকে বাধাগ্রস্ত করা সম্ভব হলেও সোমালিয়ার গ্রামীণ এলাকায় তারা এখনও তৎপর। আল কায়েদা সমর্থিত আল শাবাব জঙ্গি গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক সমর্থনপুষ্ট সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারকে উৎখাত করে দেশটিতে শরিয়া শাসন কায়েম করতে চায়।