অক্সফোর্ডের টিকা দেওয়া স্থগিত করলো দক্ষিণ আফ্রিকা

দক্ষিণ আফ্রিকায় ধাক্কা খেলো অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা। দেশটিতে আপাতত লোকজনকে আর এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। রবিবার এক বিবৃতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় এ নিয়ে একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। এতে নতুন বৈশিষ্ট্যের করোনা মোকাবিলায় অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সীমাবদ্ধতা ধরা পড়ে। অর্থাৎ, নতুন ধরনের যে করোনাভাইরাস দক্ষিণ আফ্রিকায় দ্রুত ছড়াচ্ছে, অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত টিকা তা আটকাতে পারছে না বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। মূলত এরপরই এটি দেওয়া স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

করোনার বি.১.৩৫১ ভ্যারিয়েন্টের ভাইরাস দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসটিই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছিল। ইউরোপের বেশ কিছু দেশেও এটি ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ করোনাভাইরাস থেকে এই জীবাণুটি অনেক বেশি সংক্রমক। সাধারণ জীবাণুটি থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি ছড়াতে পারে এই ভাইরাস।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এর জেরেই গত এক মাসে করোনা সংক্রমণের হার লাফিয়ে বেড়েছে। এরমধ্যেই দেশটিতে পৌঁছায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। ১০ লাখ মানুষকে দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় কর্তৃপক্ষ।

এই প্রস্তুতির মধ্যেই দুই হাজার মানুষকে নিয়ে সেখানকার গবেষকরা একটি পরীক্ষা চালান। তাতে দেখা যায়, কোভিডের নতুন স্ট্রেইনের মোকাবিলা করতে পারছে না অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনটি। তারপরই সেটি আপাতত ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার-এর হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ১৩৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৪৬ হাজার ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির প্রশাসন ঠিক করেছে, দ্রুত দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু তারই মধ্যেই এই বিপর্যয় ঘটলো।

সরকার জানিয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দিতে না পারলেও জনসন অ্যান্ড জনসন এবং ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। ওই দুটি ভ্যাকসিন নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গেও লড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে, নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গে লড়াই করার মতো ভ্যাকসিন গরমের মধ্যেই তারা নিয়ে আসবে। সূত্র: ডিডব্লিউ।