দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতিতে ইথিওপিয়ার সাড়ে তিন লাখ মানুষ

ইথিওপিয়ার সংঘাত কবলিত টাইগ্রে এলাকার প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির মুখে রয়েছে। ওই এলাকার মানবিক সংকট মোকাবিলায় গঠিত জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটির অপ্রকাশিত মূল্যায়নে এই ধারণা দেওয়া হয়েছে। বুধবার এ সংক্রান্ত জাতিসংঘের একটি অভ্যন্তরীণ নথি দেখার কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

গত সোমবার ইন্টার এজেন্সি স্টান্ডিং কমিটির বৈঠকে টাইগ্রে অঞ্চলের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। জাতিসংঘের অন্তর্গত এবং অন্তর্গত নয় এমন ১৮টি সংস্থা নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর নেতৃত্বে রয়েছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রধান মার্ক লোকক। কূটনীতিকরা বলছেন, কমিটির বিশ্লেষণ বৃহস্পতিবার নাগাদ প্রকাশ করা হতে পারে।

ওই মূল্যায়নে বলা হয়েছে  দুর্ভিক্ষের এড়াতে টাইগ্রে অঞ্চলে জরুরি ভিত্তিতে খাবার এবং কৃষি অথবা জীবিকা সহযোগিতার প্রয়োজন। তবে ইথিওপিয়ার জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রস্তুতি কমিটির প্রধান মিতুকু কাসা বলেছেন, টাইগ্রে অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা ঠিক হবে না। স্থানীয় স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী টাইগ্রে পিপল’স লিবারেশন ফোর্স (টিপিএলএফ) ত্রাণের গাড়িবহরে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মিতুকু কাসা বলেন, আমাদের কোনও খাবার সংকট নেই। ৯০ শতাংশের বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। টিপিএলএফ বাহিনী ত্রাণ সংস্থার কর্মী এবং খাবারের ট্রাকে হামলা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এই অভিযোগের কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি টিপিএলএফ।

২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবি আহমেদ ক্ষমতা আসার পর আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার আমূল পরিবর্তন হতে শুরু করে। প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশক ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটে তারই হাত ধরে। এই কারণে ক্ষমতায় আসার মাত্র এক বছরের মাথায় নোবেল শান্তি পুরস্কার পান তিনি। প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় প্রশংসিত হলেও নিজ দেশের স্বাধীনতাকামী অঞ্চল টাইগ্রেতে শান্তি ফেরাতে তেমন পদক্ষেপ নেননি তিনি। উল্টো ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের নামে টাইগ্রেয়ানদের কোণঠাসা করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর প্রভাবেই টাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট পার্টির (টিপিএলএফ) সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে গত বছরের নভেম্বরে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।