ইউক্রেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের নজর এবার আফ্রিকায়। কঙ্গো ও রুয়ান্ডার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক খনিজসম্পদ চুক্তির জন্য তোড়জোড় করছে ওয়াশিংটন। বৃহস্পতিবার (১ মে) এ তথ্য দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আফ্রিকা বিষয় জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাসসাদ বৌলোস। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
দোহায় এক সাক্ষাৎকার প্রদানকালে বৌলোস বলেছেন, শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হলে সেদিনই কঙ্গোর সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি সম্পন্ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। আর রুয়ান্ডার সঙ্গে একই তবে কিছুটা ভিন্ন আকারের চুক্তি করা হবে।
এই চুক্তি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা কঙ্গোতে নজিরবিহীন অগ্রগতি অর্জন করছে। অঞ্চলটি ট্যান্টালাম ও সোনাসহ বিভিন্ন খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ এবং কয়েক দশক ধরে সংঘাতে জর্জরিত। রুয়ান্ডা অবশ্য এম২৩ বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সহিংসতা বন্ধে কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে একত্রিত হয়েছিল সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো। সেখানে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শান্তির জন্য কঙ্গো ও রুয়ান্ডার পৃথক খসড়া জমা দেবে।
রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে কঙ্গো সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বৌলোস জানিয়েছেন, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে রুয়ান্ডা ও কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর হোয়াইট হাউজে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। শান্তিচুক্তির চূড়ান্ত খসড়ার বিষয়ে সেখানে আলোচনা হতে পারে।
তবে ওই চুক্তির আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পৃথকভাবে অর্থনৈতিক চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। এটা হলে, কঙ্গোর খনিতে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ শুরু করবে পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি রুয়ান্ডাতে খনিজ প্রক্রিয়াকরণ অবকাঠামো তৈরির জন্য বিনিয়োগ করা হবে।
আফ্রিকার ওই অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহী মার্কিন ও পশ্চিমা কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক খনিজ চুক্তিগুলো স্বাক্ষর হলেই তারা বিনিয়োগ শুরু করবে।
তবে হোয়াইট হাউজে বৈঠকের সঙ্গে আরও কিছু নিরাপত্তাজনিত শর্ত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যেমন কঙ্গো থেকে রুয়ান্ডার সেনা প্রত্যাহার করতে হবে এবং এম২৩ বিদ্রোহীদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি, কঙ্গোর মিলিশিয়া নিয়ে রুয়ান্ডার নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করার দায়িত্ব কঙ্গোকেই নিতে হবে।
চুক্তির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বৌলোস। এই কমিটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, ফ্রান্স এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রতিনিধি হিসেবে টোগো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।