সুদানে অভ্যুত্থান বিরোধী তীব্র বিক্ষোভ, নিহত ২

সুদানের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে শনিবার দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে সামরিক বাহিনীর গুলিতে দুই জন নিহত হয়েছে। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সেন্ট্রাল ডক্টরস কমিটি জানিয়েছে, খার্তুম প্রদেশের ওমদুরমান শহরে সেনাসদস্যদের হাতে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য বিক্ষোভে কোনও ধরনের গুলি চালানোর খবর নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। বরং একজন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হওয়ার দাবি করেছে তারা।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশজুড়ে এদিনের বিক্ষোভে অংশ নেয় হাজার হাজার মানুষ। আন্দোলনকারীরা সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে বেসামরিক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে আওয়াজ তোলে।

খার্তুমের বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতেই ছিল সুদানের পতাকা। সামরিক শাসনের প্রশংসা করা যায় না, এই দেশ আমাদের, আমাদের সরকার বেসামরিক প্রভৃতি স্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলে তারা।

‘মিলিয়ন অব অক্টোবর ৩০’ ব্যানারে এদিনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানী খার্তুমের প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। সীমিত করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা ও মোবাইল সংযোগ। এমনকি গ্রাফিতির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেনাবাহিনী।

গত ২৫ অক্টোবর সুদানের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। অন্তর্বর্তীকালীন সার্বভৌম কাউন্সিল ও সরকার ভেঙে দিয়ে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এরপর থেকেই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। এসব বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

২০১৯ সালে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরকে উৎখাতের পর বেসামরিক গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির একটি দুর্বল চুক্তিতে উপনীত হয় সামরিক বাহিনী। ওই চুক্তির আলোকেই গত দুই বছর ধরে দেশটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু গত সেপ্টেম্বরে বশিরের অনুসারী সামরিক কর্মকর্তাদের অভ্যুত্থানের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে দেশটিতে আবারও উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এর ধারাবাহিকতায় ২৫ অক্টোবর ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী।