ফের বিদ্রোহীদের দখলে ইথিওপিয়ার বিশ্ব ঐতিহ্যের শহর

ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টাইগ্রে এলাকার বিদ্রোহীরা ফের ঐতিহাসিক শহর লালিবেলা দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র শহরটির দখল বদলের সময় কোনও গোলাগুলি হয়নি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রাচীন পাথরে খোদাই করা চার্চের শহর লালিবেলা গত আগস্টে দখল করে টাইগ্রে বাহিনী। তবে ১১ দিন আগে শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেয় কেন্দ্রীয় সরকারের বাহিনী।

প্রায় বছর জুড়ে চলা গৃহযুদ্ধে সম্প্রতি অগ্রগতি অর্জন করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে এতে শুরু হয়েছে মানবিক সংকট। জাতিসংঘ বলছে, ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক মানুষ ক্ষুধার্ত। টাইগ্রে, আমহারা এবং আফার অঞ্চলের প্রায় ৯০ লাখ মানুষের জরুরি খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শনিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে কেন্দ্রীয় সরকার সংশ্লিষ্ট বাহিনী লালিবেলা ত্যাগ করা শুরু করে। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ ব্যাচটি আজ (রবিবার) সকালে চলে গেছে। গত রাতে আমরা দূরে গুলির শব্দ শুনেছি কিন্তু টাইগ্রে বাহিনী লালিবেলা ফের দখলে নেওয়ার সময় শহরে কোনও গোলাগুলি হয়নি।’

টাইগ্রে পিউপিল’স লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ব্যাপক প্রতিরোধমূলক আক্রমণ শুরু করেছে। লালিবেলার কাছে গাসেনা শহরেও হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তারা। টিপিএলএফ মুখপাত্র গেতাচেও রেডা এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘আমাদের বাহিনী খুব, খুব, খুবই ভালো করছে!’

সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে শনিবার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের কার্যালয়ের এক টুইট বার্তায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ফ্রন্ট লাইনে (যুদ্ধ এলাকায়) ফিরে গেছেন এবং সরকারি বাহিনী টাইগ্রে অঞ্চলের রাজধানী মেকেল্লে অভিমুখে কৌশলগত একাধিক শহর ফের দখল করেছে।

গত সপ্তাহে লালিবেলার বাসিন্দারা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায় টাইগ্রে বাহিনী আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত শহরটি নিয়ন্ত্রণে রাখার সময়ে তারা পবিত্র স্থানগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে তবে বাসিন্দাদের জীবন কঠিন করে তুলেছে। এএফপির খবরে বলা হয় বিদ্রোহীরা খাবার এবং মোবাইল টেলিফোন দাবি করে। এছাড়া তারা মেডিক্যাল সরঞ্জামের দোকানগুলো লুট করে।

রবিবার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বহু বাসিন্দা শহর ছেড়ে চলে গেছেন। কারণ তারা আশঙ্কা করছেন টাইগ্রে বাহিনী প্রতিশোধ নিতে পারে।

লালিবেলায় একশিলায় খোদাই করা ১১টি চার্চ রয়েছে। এগুলো ১২তম এবং ১৩তম শতাব্দীতে নির্মিত। ১৯৭৮ সালে এগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো।