শান্তিচুক্তি কলম্বিয়ার অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনবে: প্রেসিডেন্ট সান্তোস

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসকলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোস জানিয়েছেন, ফার্ক বিদ্রোহীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার ফলে দেশটির অর্থনীতিতে গতিশীলতা আসবে এবং প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে। যা দিয়ে সামাজিক উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন সান্তোস।

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, শান্তির চেয়ে যুদ্ধের খরচ বেশি। গত ২৩ বছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশ বেশি হতে পারত।

ফার্ক বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ কলম্বিয়ার সমাজে বিরাট প্রভাব ফেলেছে জানিয়ে সান্তোস বলেন, এমনকি আমরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশের ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেছি। যার ফলে আমরা একে অপরে ব্যথাও বুঝতে অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছি। ৫০ বছর ধরে যে দেশ যুদ্ধে লিপ্ত সেই এরকম অনেক গুণই হারিয়ে ফেলে।

সান্তোস বলেন, চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শুধু সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে। এখন কঠিন কাজ শুরু করতে হবে, আমাদের দেশকে পুনর্গঠন করার কাজ শুরু করতে হবে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) কিউবার রাজধানী হাভানায় ৫২ বছর ধরে চলে আসা বিদ্রোহের অবসান ঘটাতে ফার্ক বিদ্রোহী এবং কলম্বিয়া সরকারের মধ্যে শান্তি সমঝোতা  হয়। সেই সঙ্গে অস্ত্রবিরতিও ঘোষণা করা হয়। এই সমঝোতা অনুযায়ী,  ফার্ক সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ ত্যাগ করে কলম্বিয়ার নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবে। সেই সঙ্গে বিদ্রোহীদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগ নেবে সরকার। চলতি বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি ফার্ক নেতারা ওই সমঝোতা চুক্তি অনুমোদন নিয়ে বৈঠকে বসবেন। ১৩ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর ফার্ক-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা কলম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ওই ‘কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২ অক্টোবর শান্তি চুক্তি গ্রহণ করা না করার বিষয়ে গণভোটের ডাক দিয়েছে কলম্বিয়া সরকার।

ফার্ক-এর সঙ্গে গত চার বছর ধরে শান্তি আলোচনা চলছিল। আর এতে মধ্যস্থতা করেছেন নরওয়ের নাগরিক ড্যাগ নায়ল্যান্ডার এবং কিউবা সরকার।

১৯৬৪ সাল থেকে ফার্ক বিদ্রোহীরা কলম্বিয়া সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করেন। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। লাখ লাখ মানুষ হয়েছেন ঘরহারা। এটি লাতিন অঞ্চলে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহের ইতিহাস। সূত্র: বিবিসি

/এএ/