কানাডায় রহস্যময় রোগ, আক্রান্ত হচ্ছে তরুণরা

কানাডায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি স্নায়বিক অসুস্থতা বিশেষজ্ঞদের ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে। তরুণদের ওপরও এই অসুস্থতার প্রভাব পড়ছে। কিছু আক্রান্তদের দ্রুত স্মৃতিশক্তি এবং মানসিক তীক্ষ্ণতার মতো বিষয়গুলো হ্রাস পাচ্ছে। রহস্যময় এই অসুস্থতা নিয়ে সতর্ক করেছেন দেশটির নিউ ব্রান্সউইক প্রদেশের একজন হুইসেলব্লোয়ার। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্র্ডিয়ান।

গার্ডিয়ানের সঙ্গে আলাপকালে প্রদেশের দুইটি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি ভাইটালিটি হেলথ নেটওয়ার্কের একজন কর্মী বলেছেন, সন্দেহজনক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্যগত আগের কোনও সমস্যা নেই এমন তরুণদের মধ্যেও দ্রুত ওজন কমে যাওয়াসহ সংকটপূর্ণ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। অনিদ্রা, হ্যালুসিনেশন, চিন্তা করতে অসুবিধা এবং সীমিত গতিশীলতা দেখা দিচ্ছে।

২০২১ সালের বসন্তের গোড়ার দিকে ঘোষণার সময় সরকারিভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষার আওতায় থাকা এমন ব্যক্তির সংখ্যা ৪৮ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে একাধিক সূত্র বলছে, বর্তমানে এ সংখ্যা ১৫০-এর মতো হতে পারে। বিশেষ করে তরুণ বয়সীদের ঘটনাগুলো এখনও আরও পর্যালোচনা করা দরকার।

সূত্রটি বলছে, ‘আমি সত্যিই এই ঘটনাগুলো সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। কারণ এগুলো দ্রুত ছড়াচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমি তাদের জন্য উদ্বিগ্ন।’

একই সময়ে, অন্তত নয়টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকা দুই জনের কোনও জেনেটিক লিংক ছাড়াই উপসর্গ তৈরি হয়েছে। এটি এই ধরনের অসুস্থতার নেপথ্যে পরিবেশগত কারণ জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

একজন ব্যক্তির ডিমেনশিয়া এবং অ্যাটাক্সিয়ার উপসর্গ বিস্তার করছিল। তার স্ত্রী, যিনি তার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন, হঠাৎ করেই তার ঘুম কমে যেতে থাকে। পেশী নষ্ট, ডিমেনশিয়া এবং হ্যালুসিনেশন অনুভব করতে শুরু করেন। এখন তার অবস্থা তার স্বামীর চেয়েও খারাপ।

৩০-এর কোঠায় বয়স এমন একজন নারীকে কথা বলতে অক্ষম হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তাকে টিউব দিয়ে খাওয়ানো হয় এবং তার প্রচুর লালা পড়ে। তার তত্ত্বাবধায়ক, ২০ বছরের একজন নার্সিং ছাত্রীরও সম্প্রতি স্নায়বিক পতনের উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করেছে।

অন্য একটি ঘটনায় একজন অল্পবয়সী মা দ্রুত প্রায় ৬০ পাউন্ড ওজন হারান। অনিদ্রা ও হ্যালুসিনেশন দেখা দেয়। ব্রেন ইমেজিংয়ে তার এট্রোফির (পুষ্টির অভাবে ক্ষয়) উপসর্গ দেখা গেছে।

ভাইটালিটি হেলথ নেটওয়ার্কের ওই কর্মী তার নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন। কারণ তিনি এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি নন। এছাড়া এ বিষয়ে কথা বলার কারণে প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন তিনি। তার দাবি, তরুণদের যে গতিতে অবনতি হয়েছে তা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের কারণেই বিষয়টি নিয়ে তাকে এগিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে তার ধারণা, এই ধরনের রোগের ক্ষেত্রে পরিবেশগত কারণ জড়িত থাকতে পারে।