লস অ্যাঞ্জেলেসে অভিবাসীদের ধরপাকড়, পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযানকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তপ্ত মুখোমুখি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সারা দিনে শহরজুড়ে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টরা একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে বহু মানুষকে আটক করে। ওই অভিযানে অংশ নেয় বিপুলসংখ্যক সশস্ত্র ফেডারেল এজেন্ট, যারা অচিহ্নিত সামরিক গাড়ি ও ভ্যানে করে শহরের নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়েন।

লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি নিউজ সার্ভিস জানায়, ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে একটি পোশাকের দোকান, ওয়েস্টলেক জেলায় একটি হোম ডিপো আউটলেট এবং সাউথ লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি গুদামঘরে অভিযান চালায় আইসিই এজেন্টরা।

এই ঘটনার প্রতিবাদে কয়েক শ মানুষ শহরের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভ করে। তারা এডওয়ার্ড আর. রয়বাল ফেডারেল বিল্ডিংয়ের দেয়ালে আইসিই-বিরোধী স্লোগান লেখে এবং যেসব ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে, তাদের অবস্থান করা কারাগারের সামনে জড়ো হয়।

লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ বিভাগ (এলএপিডি) যদিও এই অভিযানে অংশ নেয়নি, তবে বিক্ষোভ দমন করতে তাদের ডেকে পাঠানো হয়। তারা বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও পিপার স্প্রে ছোড়ে। এর আগে বিক্ষোভকে অবৈধ সমাবেশ ঘোষণা করে এলএপিডি।

বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ ভাঙা কংক্রিট পুলিশের দিকে নিক্ষেপ করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। তবে কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস এই ধরপাকড় অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ধরনের অভিযান আমাদের শহরের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায় এবং নাগরিক নিরাপত্তার মূলনীতি ভেঙে দেয়।

ন্যাশনাল ডে লেবারার অর্গানাইজিং নেটওয়ার্কের ক্যালেব সোটো বলেন, আজকের ঘটনাগুলো দেখেই বোঝা যায়, ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অভিবাসীদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া।

তিনি জানান, ৭০ থেকে ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র তিনজন আইনজীবীকে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে।

সোটোর দাবি, এসব অভিযানে আইসিই কোনও বিচারকের অনুমোদিত ওয়ারেন্ট ছাড়াই চালিয়েছে। তারা এমন কর্মস্থল বেছে নেয়, যেখানে অভিবাসী এবং নথিপত্রবিহীন শ্রমিকদের উপস্থিতি বেশি।

তিনি বলেন, যদি কেউ দৌড়াতে শুরু করে, তাহলে সেটিকে ‘যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ’ বলে ধরে নেওয়া হয় এবং ওই এলাকাতেই ধড়পাকড় শুরু হয়। এটি স্পষ্টভাবে অসাংবিধানিক।

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড়ে জোর দিয়েছেন। মে মাসের শেষ দিকে তার প্রশাসন ঘোষণা দেয়, তারা অস্থায়ী বৈধ অবস্থানপ্রাপ্ত ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসীর সুবিধা বাতিল করবে। এর মধ্যে কিউবান, হাইতিয়ান, নিকারাগুয়ান ও ভেনেজুয়েলান অভিবাসীরাও রয়েছেন।

সূত্র: আল জাজিরা