রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের বিচারে সমর্থন ১৭টি শান সংগঠনের

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের আদালতে শুরু হওয়া বিচার প্রক্রিয়ায় সমর্থন জানিয়েছে দেশটির শান প্রদেশের ১৭টি সংগঠন। সোমবার তারা এক যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে। বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ইতি ঘটাতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করা হয়।সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

20170915_2_25752480_25879118

২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের বাস্তবতায় জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)-এ মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় নিজ দেশের আইনি লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। ১০ ডিসেম্বর শুরু হওয়া বিচারকাজ চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

শান সংগঠনগুলোর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের যে সেনাবাহিনী দেশটির জাতিগত সম্প্রদায়ের ওপর কয়েক দশক ধরে নৃশংসতা চালিয়েছে, সেই কর্মকাণ্ডের নির্দেশ দাতা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে শান জাতিগোষ্ঠী।

বিবৃতিতে  আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্তের প্রতি সমর্থন জানানো হয়। এতে বলা হয়, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাসহ সুনির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি, যেন মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশজুড়ে তাদের অভিযান ও নৃশংসতা বন্ধ এবং গৃহযুদ্ধের ইতি ঘটাতে কার্যকর রাজনৈতিক সংলাপ শুর করে। এর মধ্য দিয়ে যেন মিয়ানমারের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত ন্যায়বিচার ও সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৭ টি শান সংগঠন বলেছে, রোহিঙ্গাদের মতো তারাও একই ধরনের পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছে। বিশেষ ১৯৯৬-৯৮ সালে মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে ১৪০০ গ্রামে সেনা অভিযানে তিন লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। কয়েক হাজার গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়েছে, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে বাদ যায়নি বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও।