করোনা ভাইরাস: সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি ভ্যালেন্টাইন’স বার্তা

সিঙ্গাপুরের মানুষেরা করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে ঠেকাতে ও আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসাকর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে ভ্যালেন্টাইন’স ডেতে হাতে লেখা বিভিন্ন বার্তা প্রকাশ করছেন। দেশটিতে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ৫০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকার আক্রান্তদের শনাক্ত ও ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, শিশুসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিতদের প্রতি ভালোবাসা ও সমর্থন জানাচ্ছেন।

_110880201_d3667566-bd28-41c1-8c59-a8cc0ea14bb5



সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে নিবেদিত স্ট্যান্ডআপফরএসজি নামের ফেসবুক পেজ পরিচালনাকারীদের একজন ওয়ালি থাম গত সপ্তাহে চিকিৎসাকর্মীদের ধন্যবাদ জানানোর ধারণা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনেক চিকিৎসাকর্মী বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। অনেককেই লিফট বা ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষজন আশঙ্কা করছেন চিকিৎসাকর্মীদের মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছে বিষয়টি ছিল মানুষের এই উদ্বেগ দূর করা। আমি #braveheartsg হ্যাশট্যাগ শুরু করি। কারণ আমাদের এই মহান হৃদয়ের মানুষগুলো প্রয়োজন। আমাদের সাহস প্রয়োজন, আমাদের সাহসী হতে হবে। এই মুহূর্তে এসব স্বাস্থ্যকর্মীর চেয়ে কারা সাহসের কাজ করছেন?

_110860805_146bd48c-318e-4721-9c7c-cd6e7ea073cc
শনিবার থেকে এই হ্যাশট্যাগ পাঁচ হাজারের বেশিবার ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং তার ফেসবুক পেজেও উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, একে অন্যকে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিতে আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করি। এই কঠিন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অতিক্রম করে আরও শক্তিশালী হয়ে আত্মপ্রকাশ করব।
নগর রাষ্ট্রটিতে ২০০৩ সালে ছড়িয়ে পড়া সার্স সংকটের স্মৃতি এখনও অনেকের স্মৃতিতে রয়েছে। ওই সময় কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং অনেকেই মারা গিয়েছিলেন।


সিঙ্গাপুরে নতুন করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এখনও সার্সের মতো ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। তবু সিঙ্গাপুর সরকার জনগণের উদ্বেগ দূর করতে তাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতি জোর দিয়েছে। এমন উদ্যোগ অনেক সময় সফল হয় না। গত সপ্তাহে সতর্কতার মাত্রা বৃদ্ধি করার পর দেশটির একটি সুপার মার্কেটে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতেও অনেকেই আতঙ্ক সরিয়ে সহমর্মিতা, সহযোগিতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন।

_110891766_f2f56247-0e9b-4d39-a276-19fb58b08c75
স্ট্যান্ডআপফরএসজি ফেসবুক গ্রুপে ৮ শতাধিক হাতে লেখা চিরকুট পাঠানো হয়েছে। ওয়ালি জানিয়েছেন, তারা যতদ্রুত সম্ভব চেষ্টা করছেন ভ্যালেন্টাইন’স ডে’র দিন এগুলো প্রিন্ট করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পাঠানোর জন্য।
১৩ বছরের ফেলিসিয়া প্যাং জিয়া জুয়ান তার সমর্থনের বার্তা পাঠিয়েছে স্কুলের অনুশীলনের অংশ হিসেবে। লিখেছে, তারা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছেন তবু বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। মানুষ মনে করছেন তারা ভাইরাস বহন করছেন শরীরে। আমি নিশ্চিত যে, তারাও ভাইরাসটি নিয়ে আতঙ্কে আছেন।
ব্রেন্ডা নিও নামের এক শিক্ষক বলেছেন, চারদিকে এত আতঙ্ক দেখে আমি এতে জড়িত হতে চেয়েছি। ভয় আমাদের স্বার্থপরতা ও বৈষম্যের দিকে নিয়ে যায়। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে একে অন্যের দেখাশোনা করতে পারব। আমি মহানুভবতা, সাহস, আশা ও উৎসাহব্যঞ্জক এই বার্তা প্রদানের মতো ক্ষুদ্র প্রয়াস চালিয়েছি।