জীবনের পরোয়া না করে রাজপথে মিয়ানমারের জান্তাবিরোধীরা

মিয়ানমারে বুধবার সামরিক সরকারবিরোধী অন্তত ৩৮ বিক্ষোভকারী নিহতের পরদিনও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার জান্তাবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশটির বিভিন্ন শহর ও নগরে রাজপথে নেমেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভে একদিনে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনার পরও এই বিক্ষোভ চলছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক গণ বিক্ষোভ এবং নাগরিক অসহযোগ আন্দোলন চলছে। বিক্ষোভকারীরা সেনা শাসনের অবসান এবং দেশটির নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবি করছেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির অভ্যুত্থান এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস নিপীড়নের নিন্দা জানালেও তা অবজ্ঞা করছে সেনা সরকার।

মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত ক্রিস্টিন শার্নার বার্গেনার বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের হতবাক করা ফুটেজ সামনে আসছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও তাজা গুলি চালানো হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার সকালে পশ্চিম ইয়াঙ্গুনের শহর পাথেইন-এ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি ছুড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সেখানে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এর আগে বুধবার পুলিশ ও সেনা সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়ে। কোনও সতর্ক সংকেত ছাড়াই বিভিন্ন শহর ও নগরে গুলি ছুড়া হয়। মঙ্গলবার প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ সামরিক সরকারের প্রতি ধৈর্য ধারনের আহ্বান পরও এমনটি ঘটলো।

জীবনের পরোয়া না করা অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, তারা সামরিক শাসনের অধীনে বাস করতে চান না এবং নির্বাচিত ও উৎখাত হওয়া নেত্রী অং সান সু চির মুক্তির জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। নভেম্বরের নির্বাচনে সু চি’র জয়ের স্বীকৃতিও চাইছেন তারা।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে অ্যাক্টিভিস্ট মাউং সাউঙ্গখা বলেন, আমরা জানি যে কোনও সময় গুলিবিদ্ধ ও মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু জান্তার অধীনে বেঁচে থাকার কোনও অর্থ হয় না।

ইয়াঙ্গুনের কিছু অংশে বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের গুলি থেকে বাঁচতে আড়ালের ব্যবস্থা করেছেন। কয়েকটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়াও তুলে ফেলেছেন সামরিক সরকারবিরোধীরা।

ইয়াঙ্গুনের এক খাবার বিক্রেতা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার পর এখানে আসা বিপজ্জনক। রাস্তায় তারা (সেনা ও পুলিশ) গুলি ছুড়ছে।

ইয়াঙ্গুনের যে অংশে প্রতিদিন বিক্ষোভ হয় সেখানে প্রতিবাদকারীরা পুরনো টায়ার, ইট, বালুর বস্তা, বাঁশ ও কাঁটাতার দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করেছে।