মিয়ানমারের শান্তি পরিকল্পনায় অগ্রগতি আনেনি আসিয়ান: ইন্দোনেশিয়া

মিয়ানমারে রক্তপাত বন্ধে আসিয়ানের শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনে বৃহস্পতিবার এ কথা বলেন উইডোডো।

ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ ফ্লোরসে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় জাতি সংস্থার (আসিয়ান) তিন দিনের বৈঠকে জান্তা শাসিত মিয়ানমারে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার বিষয়টি প্রাধান্য পায়।

আঞ্চলিক ব্লকটি সংকট সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিলেও দুই বছর আগে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্মত হওয়া পাঁচ-দফা পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারেনি।

অং সান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সামরিক বাহিনী ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্র্যাকডাউন শুরু করে। এতে হাজার হাজার মানুষকে নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠায় লড়াই তীব্র হচ্ছে।

লাবুয়ান বাজো শহরে আলোচনার শেষ দিনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো স্বীকার করেছেন, তারা শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ‘কোনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ আনতে পারেনি।

উইডোডো বলেন, ‘আমাদের সামনের পথ নির্ধারণের জন্য আসিয়ানের ঐক্য দরকার’।

শীর্ষ সম্মেলনে আসিয়ান সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি সেই প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলে মনে হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনার একটি অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু দেশ জান্তাকে আসিয়ান বৈঠকে আমন্ত্রণ জানাতে চেয়েছিল। কারণ তারা মনে করছে ‘বিচ্ছিন্নতার সময়’ মিয়ানমার নিজেকে অনেকটাই শুধরে গেছে।

মিয়ানমার এখনও ১০-সদস্যের আসিয়ান ব্লকের সদস্য। তবে শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জান্তার ব্যর্থতার কারণে দেশটির শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

জান্তা সরকার অবশ্য শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে আসছে। বিরোধীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়টিও তারা অস্বীকার করেছে।

তবে গত মাসে বিদ্রোহী অধ্যুষিত একটি গ্রামে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১০৭ জন নিহত হলে, বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। এতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশটির ভাবমূর্তি আরও খারাপ হয়েছে।  

এ বছর আশা করা হচ্ছিল যে আসিয়ানের সদস্যরা কূটনৈতিক অভিজ্ঞতার মাধ্যমে মিয়ানমারকে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য চাপ দেবে।

জাকার্তার সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের লিনা আলেকজান্দ্রা বলেন, ‘আপনি যখন দেখবেন আপনার পাশের প্রতিবেশীর বাড়ি জ্বলছে, তখন আপনি কী করবেন? এটা আমার সমস্যা নয় বলে আপনি চুপ থাকবেন?

সূত্র: আরব নিউজ