আতঙ্কে নাগোর্নো-কারাবাখ ছাড়ছে আর্মেনীয়রা, বৈঠকে বসছেন এরদোয়ান

বিরোধপূর্ণ নাগোর্নো-কারাবাখ থেকে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে হাজার হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ান। অঞ্চলটিতে আজারবাইজান সামরিক অভিযান চালানোর ২৪ ঘণ্টার মাথায় রাশিয়ার মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ফলে অঞ্চলটি আজারবাইজানের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছে তারা।

পুরো পরিস্থিতি ঘোলাটে, কারণ আগেও আজারি বাহিনীর সঙ্গে নাগোর্নো-কারাবাখের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তুমুল লড়াই হয়েছিল। তখন এভাবে সমঝোতায় না পৌঁছালেও এবার অস্ত্র ও গোলাবারুদ আজারি বাহিনীর হাতে জমা দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। বিষয়টির মধ্যস্থতা করেছে মস্কো।

ফলে অঞ্চলটিতে যুগ যুগ ধরে বসবাসরত জাতিগত আর্মেনিয়ানরা পালিয়ে আর্মেনিয়ার মূল ভূখণ্ডে ঢুকছে। এতে নতুন করে শরণার্থীর ঢল সৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

এমন বাস্তবতায় করণীয় নিয়ে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আজারি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি আঙ্কারা।

দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুটি যুদ্ধ হয়েছে। প্রথম যুদ্ধ হয় ১৯৯০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর। এরপর ২০২০ সালে আবার যুদ্ধে লিপ্ত হয় দেশ দুটি। গত বছর ডিসেম্বর থেকে আজারবাইজান আর্মেনিয়া থেকে কারাবাখ যাওয়ার একমাত্র পথ অবরোধ করে দিলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। গত মঙ্গলবার নাগোর্নো-কারাবাখে আজারবাইজানের সেনা অভিযানের ২৪ ঘণ্টার মাথায় আত্মসমর্পণ করে আর্মেনিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। চুক্তি অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেওয়া শুরু করে তারা।

কারাবাখে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনীয় বসাবাস করে। তাদেরই একজন নেতা রবিবার রয়টার্সকে জানান, এই পরিস্থিতিতে তারা আজারবাইজানের অংশ হয়ে থাকতে চায় না। নিপীড়ন এবং জাতিগত নিধনের ভীতি কাজ করছে লোকজনের ভেতর।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে, সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত নাগোর্নো-কারাবাখ ছেড়ে প্রায় ৩ হাজার মানুষ আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে।  আর্মেনীয় সরকার বলছে, তারা হাজার হাজার শরণার্থীর চাপ নিতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।