মিয়ানমারের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত শহরের দখল নিলো বিদ্রোহীরা

চীন সীমান্তে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ চিনশওয়ে শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। দেশটির সশস্ত্র গ্রুপগুলোর সঙ্গে কয়েকদিনের ভয়ানক লড়াইয়ের পর শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। বুধবার এই খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

খবরে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীরা শহরটি দখলে নেওয়ার পর সেখানকার সরকার ব্যবস্থা অচল করে দিয়েছে। এ বিষয়ে জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, ‘চিনশওয়ের সরকার ব্যবস্থা, প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে।’

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই শহর দখলের ঘটনা জান্তা সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তবর্তী এই শহর মিয়ানমার ও চীনের মধ্যকার প্রধান একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের সীমান্ত বাণিজ্যের এক-চতুর্থাংশেরও বেশি হয়েছে চিনশওয়ের মধ্য দিয়ে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গত সেপ্টেম্বরে এই খবর জানিয়েছিল মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

জান্তা সরকারের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত তিনটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হলো- তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি। একত্রে তারা ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’নামে পরিচিত। ধারণা করা হয়, এই গোষ্ঠীগুলোতে ১৫ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। স্বায়ত্তশাসন ও সম্পদের দাবিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত লড়াই করেছে তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সংযোগকারী বেশ কয়েকটি সামরিক ফাঁড়ি এবং প্রধান সড়ক দখল করার দাবি করেছে ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’। সোমবার তারা কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ প্রকাশ করেছে যেখানে চিনশওয়ে শহরে তাদের সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

বিদ্রোহীদের দাবি, শহরটি দখলে সময় বেশ কয়েকজন সেনা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সামরিক সরকার।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উভয় পক্ষ শত্রুদের হতাহতের ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে এবং নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে প্রকাশ করছে।