পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচনে কারা জয়ী হচ্ছেন তা সম্পর্কে স্পষ্ট কোনও চিত্র উঠে আসেনি। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে এগিয়ে রয়েছেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ফলে বেশি আসনে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেলে তারা কি সরকার গঠন করতে পারবেন, এমন আলোচনা শুরু হয়েছে।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার রাত ১১টা পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের ২৬৬টির মধ্যে ২৫১টি আসনের বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্ররা জয় পেয়েছেন ১০১ আসনে, নওয়াজের পিএমএল-এন জিতেছে ৭০ আসনে এবং বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি আসন পেয়েছে ৫১টি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, তাত্ত্বিকভাবে পার্লামেন্টের সদস্যরা দলমত নির্বিশেষে সরকার গঠনে সক্ষম।
- আরও পড়ুন: বিজয় ভাষণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন নওয়াজ শরিফ
পিটিআই’র ক্ষেত্রে তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা কোনও দলে যোগদান করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। তাদের নিজেদের স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখতে পারার সুযোগ রয়েছে। যদি তারা সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় আসন (২৬৬টির মধ্যে ১৩৪) পেয়ে যান তাহলে সম্ভবত তারা সরকার গঠনের সুযোগ পাবেন।
কিন্তু এর ফলে একটি চরম দুর্বল সরকার গঠন হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। কারণ, এ ক্ষেত্রে পক্ষত্যাগের ঝুঁকিতে থাকা সংসদ সদস্যরা যেকোনও সময় শাসক জোট ত্যাগ করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আরেকটি পিছুটান রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। তারা স্বতন্ত্র অবস্থানে অটল থাকলে সংরক্ষিত আসন হারাবেন। সংরক্ষিত আসনগুলো নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য রাখা হয়েছে।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের ২৬৬টি আসনের সদস্য সরাসরি নির্বাচিত। আরও ৬০টি আসন নারীদের এবং ১০টি আসন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। এসব আসন সরকার গঠনকারী দলের সরাসরি জেতা আসনের ভিত্তিতে বণ্টন করা হয়।
এছাড়া পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি সরকার গঠনের জন্য অন্য কোনও দলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তা আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে জানাতে হবে।
পিটিআই প্রধান গোহর খান বলেছেন, আমরা পিপিপি বা পিএমএল-এনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি না। আমরা জোট সরকার গঠন করতে চাই না। আমরা কেন্দ্র ও পাঞ্জাবে সরকার গঠন করবো। তিনি দাবি করেছেন, পিটিআই ১৫০টি আসন জিতেছে এবং দলটি কেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন অর্জন করতে সক্ষম হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পিএমএল-এন-এর প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজ লিখেছেন, কিছু ফল এখনও ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু পিএমএল-এন একক বৃহত্তম দল হতে চলেছে। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পরপরই নওয়াজ শরিফ দলের প্রধান কার্যালয়ে যাবেন বিজয় ভাষণ দেওয়ার জন্য। সঙ্গে থাকুন।
অপর দিকে, পিএমএল-এন ইশাক দার বলেছেন, নির্বাচনে জয়ী হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। সংবিধান মেনে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তারা যে কোনও দলে যোগদান করবেন।
তিনি বলেছেন, আমরা কাউকে আমাদের দলে যোগদানে বাধ্য করতে পারি না। যারা আগ্রহী তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি।