ইউক্রেনের শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন: ল্যাভরভ

ইউক্রেনের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা অর্থহীন। কেননা, এটি দখলকৃত এলাকা থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের মতো অগ্রহণযোগ্য ধারণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এইসব ধারণাকে রাশিয়া সমর্থন করে না। শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাশিয়ার একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

মস্কোর দৈনিক পত্রিকা ইজভেস্টিয়াকে ল্যাভরভ বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত রাশিয়াকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়াসহ এর মৌলিক ভিত্তিগুলোর পরিবর্তন করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রস্তাবিত শান্তি সম্মেলন সফল হবে না।

শান্তি আলোচনার বিষয়ে রাশিয়ার অবস্থান নিয়ে ল্যাভরভ বলেন, ‘যেকোনও পরিস্থিতিতে আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত। তবে তা ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ‘শান্তি ফর্মুলার’ ভিত্তিতে নয়।’

এই ফর্মুলার ঘোর বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘ওয়াশিংটন, ব্রাসেলস, লন্ডন, প্যারিস বা বার্লিনের কোনও রাজনীতিবিদ কীভাবে বলতে পারেন জেলেনস্কির ফর্মুলার কোনও বিকল্প নেই।’

জেলেনস্কি প্রস্তাবিত ওই শান্তি পরিকল্পনায় ২০১৪ সালে রাশিয়ার সংযুক্ত করা ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের ১৯৯১ সাল পরবর্তী সোভিয়েত সীমানা পুনরুদ্ধারসহ রুশ দখলকৃত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ওই প্রস্তাবে রাশিয়াকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন আক্রমণের জন্য জবাবদিহি করার জন্য একটি উপায় বের করার আহ্বানও জানানো হয়।

ইউক্রেনের এই পরিকল্পনাগুলোকে অগ্রহণযোগ্য বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ল্যাভরভ। এদিকে, জেলেনস্কিও তার প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা ছাড়া অন্য যে কোনও ভিত্তিতে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি নন বলে সাফ জানিয়েছেন।

ওই সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ সুইজারল্যান্ডের কর্মকর্তা এবং কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সাক্ষাতের সময় তারা তাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, বার্নে অনুষ্ঠেয় শান্তি সম্মেলনে রাশিয়ার অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত এবং এটি বাস্তবসম্মত শর্তে পরিচালনা করা হবে।

এসময় সুইস কর্মকর্তারা ল্যাভরভকে বলেন, ‘আমরা জানি আপনাকে ছাড়া কোনও কিছুর সমাধান করা যাবে না। তাছাড়া এটা করা অন্যায়ও।’ তারা বলেন, পরিকল্পনাটিতে সবাই একমত হলেই রাশিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

সাক্ষাৎকারে ইউক্রেন সংঘাত থেকে অস্ত্র চুক্তি বিষয়ক আলোচনার ইস্যুটিকে আলাদা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের সমালোচনাও করেছেন ল্যাভরভ।

এ বিষয়ে ইজভেস্টিয়াকে তিনি বলেন, ‘এটি রসিকতা ছাড়া কিছুই নয়। এটি মার্কিন প্রশাসনের বৈদেশিক নীতি নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। এই সব সিদ্ধান্ত বরং এটিই স্পষ্ট করছে, যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্র নীতিতে এমন মানুষ কাজ করছেন যারা কূটনীতিই বুঝেন না।’