ট্রাম্পের চীন সফরে ২৫০০ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো চীন সফরে এসে আড়াই হাজার কোটি ডলারের বেশি অর্থমূল্যের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্পের সফরে কোটি ডলারের অনেকগুলো চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বোয়িং, জেনারেল ইলেক্ট্রিক ও কুয়ালকম। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ঘটনাকে ‘সত্যিকারের বিস্ময়’হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী জং শান।

gettyimages-871559942-ed4c83a3f22534bd80ca7715d4c9a1c907fdb796-s900-c85

এই বড় অংকের চুক্তিগুলো প্রমাণ করে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি মেটাতে ট্রাম্প যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনি প্রচারণার সময় তা বাস্তবায়ন করতে চলেছেন। তবে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে মার্কিন ব্যবসায়ীদের আরও অভিযোগ ও উদ্বেগ রয়েছে। চীনের বাজারে প্রবেশাধিকার, সাইবার নিরাপত্তা এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির উপস্থিতি তাদের উদ্বেগের কারণ।

চীনে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান উইলিয়াম জারিত মনে করেন, এসব চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে শক্তিশালী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইঙ্গিত। তিনি বলেন, তবে এখনও লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। কারণ এখনও মার্কিন কোম্পানিগুলো চীনে ব্যবসার করতে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হবে।

মার্কিন টেক কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফেসবুক ও গুগল এখনও চীনে প্রায় নিষিদ্ধ। গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড মোটর ও জেনারেল মোটর চীনে ব্যবসা করছে যৌথ কোম্পানির মাধ্যমে। আর হলিউডের চলচ্চিত্রকে কঠোর কোঠা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বড় অংকের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শেল গ্যাস কোম্পানিতে ২০ বছরে ৮৩.৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে চীন। এছাড়া রাসায়নিক উৎপাদনে পশ্চিম ভার্জিনিয়াতেও বিনিয়োগ করবে চীন। চীনা এনার্জি কোম্পানির জন্য বিদেশে এটিই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।

কুয়ালকম চীনা কোম্পানি শাওমি, ওপো ও ভিভোর সঙ্গে ১২ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বোয়িং জানিয়েছে চীনা অ্যাভিয়েশন সাপ্লাইয়ার্স হোল্ডিং কোম্পানির সঙ্গে ৩০০ বোয়িং বিমান বিক্রির চুক্তি হয়েছে। যে চুক্তির আর্থিক মূল্য ৩৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মধ্যে কতটি ক্রয় আদেশ নতুন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং উপস্থিত ছিলেন। শি জানান, চীনের অর্থনীতি বিদেশি কোম্পানির জন্য উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ থাকবে। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান চীনা প্রেসিডেন্ট। আর ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির দায় চাপিয়েছেন তার পূর্বসুরী সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ঘাড়ে। তিনি চীনা প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করে ‘বিশেষ ব্যক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বুধবার বেইজিং পৌঁছান ট্রাম্প। চীনে পৌঁছার পর বড় ধরনের সংবর্ধনা দেওয়া হয় ট্রাম্পকে। বৃহস্পতিবার উভয় নেতা বৈঠকে মিলিত হন এবং দুইবার বক্তব্য দেন। বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্প মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। সূত্র: রয়টার্স।