উইঘুর ইস্যুতে চাপ বাড়ছে চীনের ওপর

জিনজিয়াংয়ের মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর জন্য আইনের শাসনের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ৪৩টি দেশ। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে পঠিত এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে এর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বেইজিং।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয়ান ও এশিয়ান দেশ। তাদের অভিযোগ, উইঘুরদের বিরুদ্ধে চীন মানবাধিকার হরণ করেই যাচ্ছে। এরমধ্যে রয়েছে নির্যাতন, জোর করে বন্ধ্যাকরণ এবং গুম।

যৌথ ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা চীনকে অবিলম্বে জিনজিয়াংয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার এবং তার কার্যালয়সহ স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের অর্থবহ এবং অবাধ প্রবেশাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

ফ্রান্সের পঠিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জিনজিয়াংয়ের উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।’ সেখানে রাজনৈতিক পুনঃশিক্ষণ শিবিরের বড় নেটওয়ার্ক থাকার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রতিবেদন রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। এসব শিবিরে লাখ লাখ মানুষকে বিনা বিচারে আটক রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

চীনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে উইঘুর, মূলত মুসলিম তাজিকদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ উঠছে। আর তা ক্রমাগত অস্বীকার করে আসছে বেইজিং। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেখানে দশ লাখেরও বেশি মানুষকে বন্দিশিবিরে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ৪৩ দেশের ওই যৌথ বিবৃতিকে ‘মিথ্যা এবং চীনকে আঘাতের ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বেইজিংয়ের দূত ঝ্যাং জান। তিনি বলেন, ‘জিনজিয়াংয়ের জনগণ উন্নয়ন উপভোগ করছেন এবং সেখানকার মানুষ প্রতিদিন মুক্ত হয়ে উঠছে আর তৈরি করা অগ্রগতিতে তারা গর্বিত।’

এদিকে সাংবাদিকদের চীনা দূত বলেছেন, ওই অঞ্চলে বন্ধুত্বপূর্ণ সফর আয়োজনে বেইজিং সম্মত। তবে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মাধ্যমে তদন্তে রাজি নন তিনি। ওয়াশিংটন, প্যারিস এবং লন্ডনের মানবাধিকার পরিস্থিতির রেকর্ড ভয়াবহ বলে অভিযোগ করেন চীনা দূত।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্থানীয় আমেরিকানদের বিরুদ্ধে অমানবিক জাতিগত নির্মূলতা চালানোর অভিযোগ তুলে থাকে চীন। এছাড়া ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক আমলের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করে থাকে বেইজিং।

উল্লেখ্য, ২০১৯ ও ২০২০ সালেও একই ধরনের বিবৃতিতে দিয়ে চীনের নিন্দা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তোলে বেইজিং গণহত্যা চালাচ্ছে। এসব ঘোষণায় সমর্থন না দিতে সদস্য দেশগুলোর ওপর চাপ প্রয়োগ করে চীন।