তাইওয়ানের শত শত বাসিন্দাকে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে: প্রতিবেদন

এক মানবাধিকার গ্রুপের নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশে আটক ছয়শ’রও বেশি তাইওয়ানের বাসিন্দাকে চীনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেফগার্ড ডিফেন্ডারস নামের গ্রুপটি জানিয়েছে, এই চর্চা ‘তাইওয়ানের সার্বভৌমত্ব অবজ্ঞা করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।’

তাইওয়ান নিজেকে স্বাধীন দেশ দাবি করে। দীর্ঘদিন থেকে তারা জোর দিয়ে বলে আসছে বিদেশে আটক তাইওয়ানের বাসিন্দাদের দ্বীপটিতে ফেরত পাঠাতে হবে। তবে তাইওয়ানকে নিজেদের প্রদেশ বিবেচনা করে চীন। বেইজিং বলে আসছে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে একত্রিভূত করা হবে।

সেফগার্ড ডিফেন্ডারস জানিয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের তথ্য সংকলন করে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রত্যর্পণকে বর্হিবিশ্বে প্রভাব জোরালো করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বেইজিং। অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাইওয়ানের এসব বাসিন্দাকে খুঁজে খুঁজে বের করছে চীন।

স্পেনভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপটি জানিয়েছে,  ফেরত পাঠানো তাইওয়ানের বাসিন্দাদের চীনে ‘কোনও পরিবার এবং শেকড়’ নেই। এছাড়া চীনে তারা নিপীড়নের ঝুঁকিতে আছে বলে সতর্ক করেছে গ্রুপটি। তারা বলেছে, বেইজিংয়ের সঙ্গে স্বাক্ষরিত প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসরণ করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি দেশ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ভঙ্গ করছে। স্পেন ও কেনিয়া সবচেয়ে বেশি সংখ্যক তাইওয়ানিজকে চীনে ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

চীন অতীতে যুক্তি দিয়েছে যে, কয়েকটি মামলায় সন্দেহভাজন তাইওয়ানের বাসিন্দাকে ফেরত পাঠানো উচিত, কেননা তাদের দ্বারা আক্রান্তরা চীনের মূল ভূখণ্ডের নাগরিক।

চীনে ফেরত পাঠানো তাইওয়ানের বাসিন্দাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি সেফগার্ড ডিফেন্ডারস এর প্রতিবেদনে। তবে বলা হয়েছে, অন্তত দুই জনকে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে দেখা গেছে।

সেফগার্ড ডিফেন্ডারস এর প্রতিবেদন নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি চীন। ‘এক চীন’ নীতি অনুযায়ী বেইজিং জোর দিয়ে বলে আসছে যদি কোনও দেশ তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক চায় তাহলে তাদের প্রথমে তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। আর এই নীতির কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে তাইওয়ান।