হ্যাকিংয়ের কবলে জার্মানির শত শত রাজনীতিবিদের তথ্য

হ্যাকাররা জার্মানি শত শত রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস করে দিয়েছে। এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে, ব্যক্তিগত চিঠি, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, আইডি কার্ডের অনুলিপি, ঠিকানা ইত্যাদি। সব দলের রাজনীতিবিদরা এই হ্যাকিংয়ের ঘটনার ভুক্তভোগী হলেও একটি চরম  ডানপন্থী দলের কোনও সদস্যের তথ্য ফাঁস করা হয়নি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর আগে এরকম হ্যাকিংয়ের ঘটনায় জার্মানি রুশ হ্যাকারদের দায়ী করেছিল।s4.reutersmedia.net

তথ্যগুলো টুইটারের একটি অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করা হয়েছে। জার্মান সরকারের মুখপাত্র মার্টিনা ফিটজ সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন, ‘রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত তথ্য ও নথি ইন্টারনেটে ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে।’ হ্যাকিংয়ের ঘটনার পর দেশটির জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কমিটি জরুরি বৈঠক ডেকেছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বামপন্থী লিংকে পার্টি। দলটির প্রধান এবং নিম্নকক্ষে দলটির সংসদ সদস্যদের নেতা দিইতমার বার্টশের তথ্যও ফাঁস হয়েছে। অ্যাঞ্জেলা মের্কেলের জোট সরকারের সহযোগী মধ্য বামপন্থী দল সোশাল ডেমোক্র্যাটের লার্স ক ক্লিঞ্জ মন্তব্য করেছে, ‘যারাই এই হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা রাজনীতিবিদদের ভয় দেখাতে চায়। কিন্তু তারা সফল হবে না।’

 জার্মানির সব দলের রাজনীতিবিদরা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ডানপন্থী ‘অলটারনেটিভ ফর জার্মানির’ (এএফডি) নাম দলটির কোনও রাজনীতিবিদের তথ্য ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে নেই। প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে, চ্যান্সেল অ্যাঞ্জেলা মের্কেল বা তার কোনও ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়নি।’ জার্মান  সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন, দেশটির সেনাবাহিনীর তথ্য নিরাপদ আছে।

গত বছর জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমপিউটার নেটওয়ার্ক শক্তিশালী সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সাইবার হামলার জন্য রুশ হ্যাকারদের দায়ী করেছিলেন।  তাদের দাবি, সংশ্লিষ্ট হ্যাকিং গ্রুপ ‘এপিটি টোয়েন্টি ফোরের’ সঙ্গে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। ২০১৬ সালে মার্কন নির্বাচনের সময় হওয়া হামলার জন্যও ওই হ্যাকারদের দায়ী করা হয়েছিল।

ক্রেমিল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এসব হামলায় রাশিয়াকে দায়ী করাটা রুশভীতি থেকে উদ্ভূত এবং রাশিয়াকে অযথা অপবাদ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করার সামিল। সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফায়ার আইয়ের বিশেষজ্ঞ মাইক হার্ট মন্তব্য করেছেন, ‘বিষয়টি দুশ্চিন্তার কিন্তু বিস্ময়কর নয়। জার্মান সরকারের উচিত সাইবার নিরাপত্তাকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া।’