চেচনিয়ায় সমকামীদের ধরপাকড়: নিহত ২, আটক ৪০

সোমবার (১৪ জানুয়ারি) রাশিয়ার এলজিবিটি অধিকার কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, রুশ প্রজাতন্ত্র চেচনিয়ায় সমকামীদের ধরপাকড় ও নির্যাতনে প্রাণ গেছে দুইজনের। আটক হয়েছে ৪০ জনের মতো। চেচনিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, যেমন তারা ২০১৭ সালেও করেছিল। বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, ২০১৭ সালে সমকামিতার অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি পরবর্তীতে তার অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, সেখানে বেদম মারধরের পর তার কাছ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছিল। তাতে লেখা ছিল, চেচেন কর্তৃপক্ষের হাতে আটক ও নির্যাতিত হওয়ার কথা প্রকাশ করলে তাকে হত্যা করা হবে।pride_sucs8w

 

রাশিয়ার মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলটিতে ২০১৭ সালে এরকম ধরপাকড়ের ঘটনায় শতাধিক সমকামী পুরুষকে আটক করা হয়েছিল। তাদের ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মেরেও ফেলা হয়েছিল। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছিল। তারা চেচনিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতিত হওয়ার তথ্য দিয়েছিলেন। সেই সময় চেচেনিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল। অন্যদিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে শুরু করা হয়েছিল একটি তদন্তের। কিন্তু পরে বলা হয়েছিল অভিযোগের সপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া সমকামী নিপীড়নের বিষয়ে চেচনিয়ার প্রধান রমজান কাদিরভের মুখপাত্র আলভী করিমভ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে বলেছেন, ‘এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এতে এক আউন্স পরিমাণও সত্যতা নেই। সমকামিতার অভিযোগে চেচনিয়ায় কাউকে আটক করা হয়নি।’ কিন্তু রাশিয়ার এলজিবিটি (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল, ট্রান্সজেন্ডার) নেটওয়ার্ক সোমবার এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, গত ডিসেম্বর থেকে চেচনিয়ায় প্রায় ৪০ জন নারী-পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে সমকামিতার অভিযোগে। নির্যাতনের কারণে এদের মধ্যে অন্তত দুইজনের পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এসব ভুক্তভোগীকে সেই একই কারাগারে রাখা হয়েছে, যেখানে ২০১৭ সালে সমকামিতার অভিযোগে আটক ব্যক্তিদের রাখা হয়েছিল।

রাশিয়ার এলজিবিটি নেটওয়ার্কের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ইগর কোচেটকভ মন্তব্য করেছেন, ‘সমকামের অভিযোগে নির্যাতন কখনও থামেনি চেচেনিয়ায়। শুধু তার মাত্রাগত পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে যে আবার অভিযান শুরু হয়েছে তার সূত্র নিহিত রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমকামীদের একটি গ্রুপ পরিচালনাকারীর গ্রেফতারের ঘটনায়। গ্রেফতার করার পর চেচনিয়া তার ফোনে থাকা ব্যক্তিদের যোগাযোগের তথ্য পেয়ে গেছে এবং সেগুলো ব্যবহার করে আটক অভিযান চালাচ্ছে। সংস্থাটি ২০১৭ সালে ১৫০ জন সমকামীকে চেচনিয়া থেকে বেরিয়ে গিয়ে রাশিয়ার অন্যত্র বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছিল।