বাংলাদেশি পোশাক কারখানার বিষয়ে ইউরোপীয় সংস্থার তদন্ত

শ্রমিক নিপীড়নের অভিযোগে বাংলাদেশের একটি পোশাক কারখানার বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত একটি সংস্থা। বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে ইইউভুক্ত দেশগুলোর পোশাক ব্র্যান্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘ফেয়ার ওয়্যার ফাউন্ডেশন’ (এফডব্লিউএফ) নামের সংস্থাটি অভিযোগ পেয়েছে, সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশি পোশাক কারখানাটি শ্রমিকদের অত্যন্ত নিম্ন হারে মজুরি দেয় এবং গত জানুয়ারি মাসে কারখানাটি অন্তত ১০০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে।1D1A8123
সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাটি হচ্ছে গাজীপুরের ডার্ড কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেড। এটি বেলজিয়ামের প্রতিষ্ঠান স্ট্যানলে/স্টেলা নামের প্রতিষ্ঠানের জন্য টি-শার্ট তৈরি করে। ডার্ডে নিম্ন মজুরির কারণে শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে ১০০ জন কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। কিন্তু কারখানাটির দাবি, তারা শর্ত ভঙ্গ করার কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছে।
এফডব্লিউএফের সদর দফতর নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামে। পশ্চিমা দেশগুলোর বাজারে বিক্রি হওয়া পোশাক প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের জীবনমান নিশ্চিতে কাজ করে সংস্থাটি। এফডব্লিউএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তারা যা জানতে পেরেছেন আর অন্যান্য সূত্র থেকে যেসব খবর গিয়েছে, তাদের মধ্যে পার্থক্য অনেক। তবে কারখানাটি আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের বেতন, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য খাতের অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।’
‘স্ট্যানলে/স্টেলা পোশাক কর্মীদের জীবনমান নিশ্চিতে অত্যন্ত তৎপর। এফডব্লিউএফের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো স্ট্যানলে/স্টেলাও বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করে এটা ভেবেই যে তাদের কেনা পোশাকের অর্থে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। স্ট্যানলে/স্টেলা এফডব্লিউএফের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। গত বছর তারা বিরোধ নিরসনের জন্য প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে হয়রানিবিরোধী কমিটি গঠনের বিষয়ে ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে শ্রমিকরা কোনও অভিযোগের বিষয়ে সরাসরি তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারে।’
তৈরি পোশাক শিল্প থেকে আসা অর্থ বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের প্রায় ৮১ শতাংশ। বাংলাদেশে রয়েছে প্রায় সাত হাজার পোশাক কারখানা, যারা রফতানির সঙ্গে জড়িত। এফডব্লিউএফ মনে করে, রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে দৃষ্টিগ্রাহ্য অগ্রগতি হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় হাজারেরও বেশি শ্রমিক ভবনধসে প্রাণ হারিয়েছিল। তবে এফডব্লিউএফের মতে, বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি এখনও বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। বাংলাদেশে কর্মরত একজন পোশাক শ্রমিকের মাসিক মজুরি পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা বা ৬০ ইউরো।