নিউ জিল্যান্ডের হামলায় রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছেন এরদোয়ান: সিএইচপি

নির্বাচনি সমাবেশে নিউ জিল্যান্ডের দুটি মসজিদে হামলার ভিডিও দেখিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি। দলটির মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, এরদোয়ান একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এরদোয়ান তার সমাবেশে হামলাকারীর লাইভে সম্প্রচার করা হত্যাকাণ্ডের ভিডিওর কিছু অংশ ও অভিযুক্তের তথাকথিত ইশতেহারের কিছু অংশ উপস্থাপন করেছিলেন।47488125_303
এরদোয়ান কেন ওই ভিডিও এভাবে প্রদর্শন করলেন তার ব্যাখ্যায় বিবিসি লিখেছে, এ মাসের শেষের দিকে তুরস্কে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন। সেখানে নিজের রক্ষণশীল ভাবধারার রাজনৈতিক দলের প্রতি সমর্থন জোরালো করতেই এরদোয়ানের এই পদক্ষেপ। তিনি চেয়েছিলেন এর মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে পড়া ইসলামবিদ্বেষ ও এর বিরুদ্ধে পশ্চিমের যথাযথ ভূমিকা না রাখার সমালোচনা করতে। একই সঙ্গে তিনি দেখাতে চেয়েছিলেন, তুরস্কের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো ‘দুর্বল।’
শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলা হয়। আল নুর মসজিদ ও লিনউডে অবস্থিত মসজিদে হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৫০ জনে উপনীত হয়েছে। হামলাকারী ব্রেন্টন ট্যারান্ট একজন ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী,’ যে মনে করে ‘মুসলিমদের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি’ তৈরি করা উচিত এবং শ্বেতাঙ্গরা ‘গণহত্যার শিকার।’ সে তার তথাকথিত ইশতেহারে হামলার বিষয়ে বিভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করেছিল, যেখানে আলাদা করে বলেছিল তুর্কিদের কথা।
গত রবিবারের সমাবেশে এরদোয়ান বলেছিলেন, ‘তুরস্ককে লক্ষ্যবস্তু বানাতে চেয়েছিল নিউ জিল্যান্ডের দুই মসজিদে হামলাকারী অস্ট্রেলীয় নাগরিক। তুরস্কের মুসলমানদের বিরুদ্ধে সে হুমকি দিয়ে বলেছে, ইউরোপে তুর্কিদের কোনও ঠাঁই নেই।’ এ সময় তিনি লাইভে সম্প্রচার করা হত্যাকাণ্ডের ভিডিও কিছু অংশ সমাবেশে উপস্থিত ব্যক্তিদের দেখান এবং তথাকথিত ইশতেহারের কিছু অংশ তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি সিএইচপির সমালোচনা করেন।
তুরস্কের বিরোধী দল সিএইচপির মুখপাত্র হালিক ওজট্রাক এরদোয়ানের সমালোচনা করে বলেছেন, এরদোয়ান একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কয়েকটা ভোট বেশি পাওয়ার জন্য এই রক্তাক্ত হত্যাকাণ্ডের ভিডিও দেখানোর কি দরকার ছিল?’
এরদোয়ানের সমাবেশে হামলার ভিডিও দেখানোর জন্য সমালোচনা করেছেন নিউ জিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও। উইনস্টন পিটার্স তুর্কি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ওই ভিডিও দেখানোর কারণে দেশে-বিদেশে অবস্থান করা নিউ জিল্যান্ডের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ বিঘ্নিত হতে পারে। যেখানে অভিযুক্ত নিউ জিল্যান্ডের নাগরিক নয়, সেখানে এমনভাবে ভিডিও প্রচার করলে তা নিউ জিল্যান্ডকে ভুলভাবে উপস্থাপন করবে। সেটা ‘অন্যায্য।’