দ্য মারিউপোল ডায়েরি: ৮ বছরের শিশুর চোখে ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো দুনিয়াকে। রুশ অভিযানে রক্তাক্ত ইউক্রেন। যুদ্ধের রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের ভয়াবহতা দেশটির ৮ বছর বয়সী শিশুর ডায়েরিতে উঠে এসেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে তার দেখা যুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছে শিশু ইয়েগর ক্রাভতসভ।

মারিউপোলের একটি বেজমেন্টে প্রায় এক সপ্তাহ পরিবারের সঙ্গে লুকিয়ে ছিল ইয়েগর ক্রাভতসভ। সেখানে থাকা অবস্থায় তার নীল ডায়েরির পাতায় সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা তুলে ধরেছে।

রুশ হামলায় পরিবারটি এখন বিপর্যস্ত। মারিউপোল থেকে ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়াতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে তারা। মারিউপোলে থাকার সময় একটি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের বাড়িতে এসে পড়লে ছাদ ধসে পরিবারের তিনজনই আহত হন। এমন ঘটনা ডায়েরিতে তুলে ধরেছে ইয়েগর। 'আমার পিঠে একটি ক্ষত আছে, চামড়া ছিঁড়ে গেছে। আমার বোনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। আমারও মা-ও আহত হন'। 

ডায়েরিতে সশস্ত্র সদস্য, ট্যাংক, একটি হেলিকপ্টার এবং বিস্ফোরিত ভবন আঁকা রয়েছে। একটি পাতায় তাদের বাড়িতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়ার দৃশ্যও তুলে ধরেছে ইয়েগর।

এএফপিকে সে বলে, 'চারদিকের অস্থিরতায় আমি ভয় পেয়েছিলাম। মারিউপোল থেকে এতটা খারাপভাবে চলে যেতে চাইনি'।

ইয়েগরের মা ওলেনা ক্রাভতসোভা ডায়েরিটি প্রথম খুঁজে পান। দেখা মাত্রই কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে ইয়েগর বলে, ‘ডায়েরিটি আমি আমার পরিবারকে খুলে দেখাই। দেখা মাত্রই সবাই কাঁদে’।

ডায়েরির ছবিগুলো প্রথম অনলাইনে পোস্ট করেছিলেন ইয়েগরের বড় চাচা ইয়েভগেনি সোসনোভস্কি। যিনি একজন ফটোগ্রাফার।

এএফপি জানিয়েছে, এই পরিবারটি বন্দর নগরী আজভস্টল স্টিল কারখানার কাছেই বসবাস করতো। যা ছিল ইউক্রেনীয় সেনাদের শেষ প্রতিরোধের ঘাঁটি। রুশ বাহিনীর সঙ্গে দীর্ঘ তিন মাসের যুদ্ধে পর মে মাসের শেষে আত্মসমর্পণ করে।

ইয়েগরের পরিবার এখন জাপোরিঝিয়ায় বাস্তুচ্যুতদের জন্য তৈরি করা একটি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। তবে এই অঞ্চলটিও খুব যে একটা নিরাপদ তা নয়। ফলে কিছুদিনের মধ্যে রাজধানী কিয়েভে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে তারা।