নথি ফাঁস, গোপনে উবারকে সহায়তা দিয়েছে শীর্ষ নেতারা

ফাঁস হওয়া হাজার হাজার নথিতে দেখা গেছে, উবার  কিভাবে শীর্ষ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দরকষাকষি  করেছে এবং বিচার এড়াতে তারা কতদূর গেছে। দেখা গেছে, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং সাবেক ইইউ কমিশনার নিলি ক্রসের মতো নেতাদের কাছ থেকে উবার ব্যাপক সহায়তা পেয়েছে। আরও দেখা গেছে, অভিযানকারী পুলিশকে কম্পিউটার অ্যাক্সেস করা থেকে বিরত রাখতে ট্যাক্সি কোম্পানির সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা কিভাবে  ‘কিল সুইচ’ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। উবার বলছে তাদের অতীত আচরণের সঙ্গে বর্তমান মূল্যবোধের সম্পর্ক নেই আর এটি বর্তমানে একটি ভিন্ন কোম্পানি।

ফাঁস হওয়া উবার নথিতে এক লাখ ২৪ হাজারের বেশি রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে ৮৩ হাজার ইমেইল এবং আরও এক হাজার বিভিন্ন আলোচনার নথি রয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের পর্যন্ত সময়ের নথি রয়েছে এতে।

এসব নথি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান, আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট এবং আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এসব নথিতে প্রথমবারের মতো দেখা গেছে, ইউরোপের ট্যাক্সি শিল্পে বিঘ্ন ঘটাতে বন্ধু রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বছর জুড়ে লবিং করেছে উবার। এই প্রচারণায় কোম্পানিটি ৯ কোটি ডলার খরচ করেছে।

ফ্রান্সের ট্যাক্সি চালকেরা উবারের বিরুদ্ধে রাজপথে সহিংস বিক্ষোভ করলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ উবারের বিতর্কিত বস ট্রাভিস কালানিককে আশ্বস্ত করেন যে, তিনি কোম্পানির পক্ষে আইন সংস্কার করবেন।

উবারের নিষ্ঠুর ব্যবসায়িক নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। তবে এই প্রথমবারের মতো এই ব্যাপকতার গভীরতা এবং লক্ষ্য অর্জনে তারা কতদূর যেতে পারে তা স্পষ্ট হয়েছে।

দেখা গেছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ইইউ এর সাবেক ডিজিটাল কমিশনার নিলি ক্রস উবারের সঙ্গে আলোচনা করেন। গোপনে ইইউ নৈতিকতার নীতি ভেঙ্গে তিনি কোম্পানিটির পক্ষে লবিং করেন।

ওই সময়ে উবার কেবল বিশ্বের দ্রুত বাড়তে থাকা কোম্পানি ছিল না, সবচেয়ে বিতর্কিত কোম্পানিও ছিল। যৌন হয়রানি, তথ্য চুরি, আদালত অবমাননার মতো অভিযোগ ছিল কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার জেরে ২০১৭ সালে সরে যেতে বাধ্য হন ট্রাভিস কালানিক।