ক্রিমিয়া আর কখনও ইউক্রেনের অংশ হবে না: ক্রোয়েশিয়া

ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোরান মিলানোভিচ বলেছেন, কৃষ্ণ সাগরীয় উপদ্বীপ ক্রিমিয়া আর কখনও ইউক্রেনের অংশ হবে না। সোমবার তিনি এই মন্তব্য করেন। পশ্চিমাদের ইউক্রেনীয় নীতির কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত এই রাষ্ট্রপ্রধান কিয়েভকে সামরিক সহযোগিতা প্রদানে আপত্তির বিস্তারিতও তুলে ধরেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

২০১৪ সালে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ক্রিমিয়া দখল করে নিজেদের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে রাশিয়া। গত বছর ডিসেম্বরে ক্রোয়েশিয়ার আইনপ্রণেতারা ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে সহযোগিতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিশনে যোগ দেওয়ার একটি প্রস্তাব নাকচ করেন। এতে করে প্রধানমন্ত্রী আন্দ্রেজ প্লেন কোভিচ ও মিলানোভিচের মধ্যে গভীর বিরোধ প্রকাশ পেয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বশেষ সদস্য ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট মিলানোভিচ বলেছেন, ১১ মাসের যুদ্ধের সম্ভাব্য ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করুক তার দেশ, এমনটি তিনি চান না। পশ্চিমারা যা করছে তা গভীরভাবে অনৈতিক। কারণ এই যুদ্ধের কোনও সমাধান নেই।

মিলানোভিচ আরও বলেছেন, ইউক্রেনকে জার্মানির ট্যাংক সরবরাহ রাশিয়াকে চীনের আরও ঘনিষ্ঠ করবে। এটি স্পষ্ট যে, ক্রিমিয়া আরও কখনও ইউক্রেনের অংশ হবে না।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অঙ্গীকার করেছেন, রাশিয়ার দখলকৃত এই উপদ্বীপ পুনরুদ্ধার করা হবে। ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি অনেক দেশ। রাশিয়া দাবি করছেন, রুশ সেনারা উপদ্বীপটি দখলের পর গণভোট আয়োজন করা হয়েছে। এতে ক্রিমিয়ার মানুষেরা সত্যিকার অর্থে রাশিয়ার অংশ হওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে। এই গণভোটকে স্বীকৃতি দেয়নি বেশিরভাগ দেশ।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ করেছেন মিলানোভিচ। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক কসোভোকে একীভূত করার ঘটনাকে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলকে ন্যায্যতা দিতে ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া।

২০০৮ সালে কসোভোর স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি এখানে ইঙ্গিত করেছেন মিলানোভিচ। ১৯৯৮-৯৯ সালে যুদ্ধের সময় ন্যাটো দেশগুলো যুগোস্লাভিয়ায় বোমাবর্ষণ করে। সার্বিয়া ও মন্টেনেগ্রোর সমন্বয়ে গঠিত দেশটির আলবেনীয় জাতিগোষ্ঠীর কসোভো রক্ষায় এই হামলা চালায় ন্যাটো।

মিলানোভিচ বলেছেন, সার্বিয়া ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে আমরা কসোভোকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কসভো কিন্তু সার্বিয়ার অংশ।

তবে তিনি সতর্কতা বজায় রেখে বলেছেন, কসোভোর স্বাধীনতাকে তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করছেন না। তিনি শুধু পশ্চিমাদের দ্বিচারিতার বিষয়টি তুলে ধরতে চাইছেন”

ক্রোয়েশিয়ার সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসডিপি)-এর সাবেক প্রধান মিলানোভিচ সাংবিধানিক পদ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান ও বসনিয়ার সার্ব বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মিলোরাড দোদিকের নীতির কাছাকাছি অবস্থান গ্রহণ করেছেন।