ইউক্রেনে আসছে পশ্চিমা দূরপাল্লার অস্ত্র, যা ভাবছে রাশিয়া

পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র দেওয়া হলেও তা ইউক্রেনে সামরিক লক্ষ্য অর্জন থেকে রাশিয়াকে ঠেকাতে পারবে না, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারবে না। বুধবার এই মন্তব্য করেছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয় ক্রেমলিন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো মিত্রদের কাছে দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহের অনুরোধ জানিয়ে আসছে কিয়েভ। বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০০ কোটি ডলারের নতুন সামরিক সহযোগিতায় ইউক্রেনকে দূরপাল্লার বোমা সরবরাহ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই প্রতিবেদনের পর ক্রেমলিন এই মন্তব্য করলো।

ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি লড়াইয়ের মাত্রা তীব্র করা এবং উত্তেজনাকে বাড়িয়ে তোলা। এর ফলে আমাদের প্রচেষ্টা আরও বাড়াতে হবে। কিন্তু তারপরও ঘটনার গতি বদলাতে পারবে না।

অজ্ঞাত মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং-এর কাছ থেকে গ্রাউন্ড লঞ্চড স্মল ডায়ামিটার বোম্ব (জিএলএসডিবি) ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হতে পারে ইউক্রেনকে। এটি ৯৪ মাইল (১৫০ কিলোমিটার) দূরে আঘাত করতে সক্ষম। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক মার্কিন এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্রের অনুরাধ থাকলেও তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১৮৫ মাইল (২৯৭ কিলোমিটার)। যা দিয়ে ইউক্রেন রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারবে।

দূরপাল্লার জিএলএসডিবি বোমাটি পাওয়ার ফলে এতদিন হামলার আওতার বাইরে থাকা রুশ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। যা রাশিয়ার অগ্রগতিকে ব্যাহত করবে।

জিএলএসডিবি যৌথভাবে নির্মাণ করেছে সাব এবি ও বোয়িং। এতে এম২৬ রকেট মোটরের সঙ্গে জিবিইউ-৩৯ স্মল ডায়ামিটার বোম্ব (এসডিবি) রয়েছে। এগুলো জিপিএস নিয়ন্ত্রিত এবং কিছু ইলেক্ট্রনিক জ্যামিং এড়াতে সক্ষম। ব্যবহার করা যাবে যেকোনও পরিস্থিতিতে।  

এতদিন পর্যন্ত ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা দেশটিকে দূরপাল্লার অস্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তাদের আশঙ্কা ছিল, এগুলো দিয়ে রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালিয়ে বসতে পারে ইউক্রেন। এতে করে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে লিপ্ত হতে পারে রাশিয়া। যা চলমান যুদ্ধকে আরও বিস্তৃত করবে।

সাংবাদিকদের পেসকভ আরও বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে আলোচনার নতুন কোনও পরিকল্পনা বিবেচনা করছে না ক্রেমলিন।

মঙ্গলবার বাইডেন বলেছেন, কিয়েভের পক্ষ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রের অনুরোধ নিয়ে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন।

দীর্ঘদিনের অনুরোধের পর গত সপ্তাহে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে অত্যাধুনিক যুদ্ধের ট্যাংক সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। এরপরই ইউক্রেন যুদ্ধবিমান ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের জন্য চাপ জোরদার করেছে।