নৌবহরে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে রাশিয়া: নরওয়ে

রাশিয়ার নৌবাহিনীর উত্তরীয় নৌবহরের যুদ্ধজাহাজে ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে। সেমাবার এক প্রতিবেদনে এই দাবি করেছে নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থা। মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক-এর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা গেছে।

নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থাটি এই যুদ্ধজাহাজের কথা তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে। ধারনা করা হচ্ছে, গত ত্রিশ বছরের মধ্যে এই প্রথমবার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে নৌবহর পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে সমুদ্রে নেমেছে।

এতে বলা হয়েছে, উত্তরীয় নৌবহরের সাবমেরিন ও জাহাজে পারমাণবিক সামর্থ্যের মূল অংশ শনাক্ত করা হয়েছে।

নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, রাশিয়ার ট্যাকটিক্যাল পারমাণবিক অস্ত্র ন্যাটো দেশগুলোর জন্য নির্দিষ্টভাবে গুরুতর হুমকি। নৌবহরে আরও রয়েছে স্যাটেলাইট বিধ্বংসী অস্ত্র, সাইবার সরঞ্জাম, যা নরওয়ে ও ন্যাটোর জন্য হুমকি হতে পারে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে শীতল যুদ্ধের সময়ে উত্তরীয় নৌবহরের যুদ্ধজাহাজে প্রায়ই পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন থাকত। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই প্রথম নৌবহরটিতে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের দাবি উঠেছে।

এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে, চিরাচরিত সামর্থ্য দুর্বল হওয়ার কারণে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা রাশিয়ার বেড়েছে। এর ফলে ২০২৩ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। আগামী বছরগুলোতে রাশিয়া নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার অব্যাহত ও আরও উন্নতিসাধন করবে।

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে সরাসরি কথা বলা মোটাদাগে এড়িয়ে যাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২৫ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের বর্ষপূর্তি। তবে রুশ নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপ-চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের মতো ক্রেমলিন কর্মকর্তারা রুশ সংবাদমাধ্যমে বেশ কিছু দিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাব্য ধারণা ছড়িয়ে দিয়েছেন।

জানুয়ারিতে টেলিগ্রাম চ্যানেলে মেদভেদেভ ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেনের পরাজয়ের মুখে পড়লে রাশিয়া সম্ভবত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে। তিনি লিখেছেন, প্রচলিত যুদ্ধে পারমাণবিক শক্তিধর কোনও দেশের পরাজয় পারমাণবিক যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।

‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়’ চলমান যুদ্ধে ন্যাটোর সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বিপদ সম্পর্কেও নরওয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে।