পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আসন্ন আলোচনায় ‘পানি সমস্যা’ সমাধান না হলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি হুমকির মুখে পড়তে পারে। মঙ্গলবার (১৩ মে) সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পানি সমস্যার সমাধানে ব্যর্থতা ‘একটি যুদ্ধ ঘোষণা করার সমান’ হবে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ খবর জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে ইসহাক দার আরও বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো ইচ্ছা নেই পাকিস্তানের। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ৭ মে ভারতের বিনা উসকানিতে চালানো সীমান্ত আক্রমণের জবাবে ইসলামাবাদ কেবল আত্মরক্ষার্থেই পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
দার বলেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে ভারত একতরফা চুক্তি স্থগিত করেছে, যা আরও বিপজ্জনকভাবে যুদ্ধবিরতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তানের অবস্থান খুব পরিষ্কার। ভারতকে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে দার সতর্ক করে বলেন, ‘এটি যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য হবে।’
দার ভারতের সামরিক অভিযানকে ‘একটি যুদ্ধ’ এবং ‘কাশ্মীর অঞ্চলে নিজের আধিপত্য কায়েমের একটি কল্পনাপ্রসূত চেষ্টা’ বলে আখ্যায়িত করেন। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘পারমাণবিক বিকল্প কখনোই আলোচনার টেবিলে ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন সময় আসে যখন আপনাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা খুব নিশ্চিত ছিলাম যে আমাদের প্রচলিত সামরিক ক্ষমতা যথেষ্ট শক্তিশালী— আকাশে এবং স্থলে— আমরা তাদের পরাজিত করতে পারবো।’
যদিও বর্তমানে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। দার সতর্ক করে বলেন যে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা শুরু হয়নি। আমরা এখনো আশা করছি যে তাদের (ভারতের) শুভবুদ্ধির উদয় হবে।’
সাক্ষাৎকারে কীভাবে যুদ্ধবিরতি সম্ভব হলো- এমন প্রশ্নের উত্তরে দার বলেন, ‘সবার স্বার্থেই এই ধরনের বিষয়কে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঝুলিয়ে না রেখে দ্রুত সমাধানে যাওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয়রা আকাশে যা দেখেছে, তা তারা ভুলবে না। তারা দেখতে পেরেছে যে ক্ষয়ক্ষতি কতটা ভয়াবহ ছিল।’
তিনি কাশ্মীরকে ‘এই অঞ্চলের অস্থিরতার মূল কারণ’ হিসেবে উল্লেখ করে অঞ্চলটির ‘ভবিষ্যতের আত্মনিয়ন্ত্রণ’-এর আহ্বান জানান।
দার আরও বলেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের ‘সব রূপ ও প্রকাশ’-এর নিন্দা জানায়। পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনও সম্পৃক্ততা থাকার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন দার।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রশংসা করে দার বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেন। ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাশ্মীর সংকট সমাধান সংক্রান্ত মন্তব্যেরও উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদি তারা আমাদের প্রচেষ্টায় বিশ্বাস না করতো তাহলে তারা যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা করতেন না।’