বাইডেনকে বেলারুশে আমন্ত্রণ পুতিন মিত্র লুকাশেঙ্কোর

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো মিনস্কে ইউক্রেনে ‘যুদ্ধ বন্ধে’ এক সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বাইডেন যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাব।

লুকাশেঙ্কো বলেন, এমনকি পুতিনও মিনস্কে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দিতে চলে আসবেন: দুই ‘আগ্রাসনকারী’ ও এক ‘শান্তি প্রিয়’ প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধ বন্ধের খাতিরে এমন বৈঠক অসম্ভব কেন? পোল্যান্ড বেশি দূরে নয়। বাইডেন যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে চান, আমি একটি উড়োজাহাজ পাঠাব। অন্তত তার জন্য একটি বোয়িং পাঠাবো এবং তাকে আমরা অভ্যর্থনা জানাব।

ক্রেমলিনের বিশ্বস্ত মিত্র বেলারুশ ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই রুশ সেনারা বেলারুশের ভূখণ্ডে মহড়া চালানোর অনুমতি পেয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ করতে রুশ সেনারা দেশটির ভূখণ্ড ব্যবহার করেছে।

চলতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউজ ঘোষণা দিয়েছে, ইউক্রেনে সর্বাত্মক রুশ আক্রমণের এক বছর পূর্তিকে উপলক্ষ করে বাইডেন ফেব্রুয়ারিতে পোল্যান্ড সফর করবেন। বিষয়টি ইঙ্গিত করে লুকাশেঙ্কো বলেন, কেন বাইডেন পোল্যান্ড সফর করবেন? পোল্যান্ড কেন?

হোয়াইট হাউজের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পোল্যান্ড সফর করতে পারেন বাইডেন। সফরে তিনি পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা ও অপর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

লুকাশেঙ্কো বলেন, এতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু তিনি রাজি থাকলে আমরা তাকে মিনস্কে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত এবং গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় বসতে চাই। যদি তিনি ইউক্রেনে শান্তি চান।

লুকাশেঙ্কো আরও বলেন, আমাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। বাইডেনের এয়ারফোর্স ওয়ান অবতরণ করতে পারবে। ক্লিনটন একবার সফর করেছেন। আপনাদের উপস্থিতিতে নিশ্চয়তা দিচ্ছি পুতিন আসবেন, বৈঠক করবেন এবং সমস্যা সমাধান হবে। আমরা এখানে সব সমস্যা সমাধান করতে পারব।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তিনি মনে করেন বাইডেন আসবেন না। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ ও আরও মানুষের প্রাণহানি ঠেকানোর স্বার্থে তার আসা উচিত।

তিনি বলেন, বাইডেন পোল্যান্ড অবস্থান করবেন। কারণ পোল্যান্ড হলো ইউরোপের হায়েনা। আজকের ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তেজনা বাড়াতে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে পোল্যান্ড। পোল্যান্ড এখন খুব সোচ্চার, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি। ফলে আমি আপনি ও আপনার প্রেসিডেন্টকে মিনস্কে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা তার সম্পূর্ণ নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও আরাম-আয়েস নিশ্চিত করব। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তিনি হতাশ হবেন না। দেখা যাক, কী হয়।  

লুকাশেঙ্কো ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন রাজি থাকলে বৈঠকের জন্য ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকেও আমন্ত্রণ জানাবেন। বলেন, জেলেনস্কি সীমান্ত দিয়ে আসতে পারেন, পোল্যান্ড হয়ে নয়। আমি ও রুশ রা তার বেলারুশে নিরাপদ সফরের নিশ্চয়তা দেব। কিয়েভ থেকে মিনস্ক, মাত্র চল্লিশ মিনিটে তিনি এখানে আসতে পারবেন।

সূত্র: নিউজউইক