যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে ফেলতে ইউরোফাইটারের প্রতি আগ্রহী তুরস্ক

ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে ৪০টি ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কিনতে আলোচনা শুরু করেছে তুরস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কিনতে অগ্রগতি না হওয়ার আশঙ্কা থেকে এই পথে হাঁটছে দেশটি। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গত সপ্তাহে তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলের বলেছিলেন, ব্রিটেন ও স্পেনের সঙ্গে ইউরোফাইটার টাইফুন যুদ্ধবিমান কিনতে আলোচনা করছে তুরস্ক। তবে জার্মানিতে এতে আপত্তি জানিয়েছে।

তুর্কি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, বৃহস্পতিবার আঙ্কারাতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইয়াসার গুলের। ইউরোফাইটারের সবচেয়ে আধুনিক ও নতুন সংস্করণ কিনতে চায় তুরস্ক।

পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য তুরস্ক ২০২১ সালের অক্টোবরে মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিনের কাছ থেকে ৪০টি এফ-১৬ ও  বিদ্যমান যুদ্ধবিমান আধুনিকায়নের জন্য সরঞ্জাম কিনতে অনুরোধ পাঠায়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই যুদ্ধবিমান ক্রয় প্রস্তাবকে সমর্থন করে। কিন্তু ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও তুরস্কের মানবাধিকার ইস্যুতে মার্কিন কংগ্রেস তা আটকে দিয়েছে।

ন্যাটোকে তুরস্ক জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহে জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়টির সমাধান হবে না। এতে তুরস্কের এফ-১৬ কেনা আরও জটিলতায় পড়তে পারে।

তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলেছে, তুরস্কের বিমানবাহিনীর নতুন যুদ্ধবিমান প্রয়োজন। আমাদের প্রথম পছন্দ এফ-১৬। দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ফলাফল না পাওয়ার আশঙ্কা থেকে বিকল্প হিসেবে ইউরোফাইটার টাইফুনের কথা বিবেচনা করছি।

সূত্র আরও বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন যে, তারা জার্মানির আপত্তি দূর করতে সহযোগিতা করতে পারবেন।

জার্মানি, ব্রিটেন, ইতালি ও স্পেনের একটি কনসোর্টিয়াম ইউরোফাইটার টাইফুন নির্মাণ করেছে। এতে রয়েছে এয়ারবাস, বিএইও লিওনার্দো কোম্পানি।

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক তায়ফুন ওজবার্ক বলেছেন, আঞ্চলিক ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে তুরস্কের নতুন প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান প্রয়োজন, এটি কোনও গোপন বিষয় নয়। এক্ষেত্রে ইউরোফাইটার বিবেচনা করার ফলে বাইডেন প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়তে পারে যত দ্রুত সম্ভব এফ-১৬ বিক্রি করার জন্য।

কাদির হাস ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ের অধ্যাপক সেরহাত গুভেঙ্ক বলেন, তুরস্ককে পশ্চিমা প্রতিরক্ষা শিল্পে ধরে রাখার জন্য ইউরো ফাইটার টাইফুন হলো শেষ সুযোগ। এগুলো পেলে তুরস্কের বিমানবাহিনীর পরিচালনায় সামান্য জটিলতা হতে পারে। তারা মার্কিন ব্যবস্থায় অভ্যস্ত। কিন্তু এগুলো ন্যাটো দেশের যৌথ উৎপাদন। ফলে খুব বেশি মানিয়ে নিতে খুব বেশি সমস্যা হবে না।