বন্দি না ক্ষেপণাস্ত্র, কী ছিল বিধ্বস্ত রুশ সামরিক উড়োজাহাজে?

ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলে বিধ্বস্ত রশ সামরিক উড়োজাহাজ ইলিউশিন-৭৬ কী পরিবহন করছিল তা নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। ইউক্রেনের দাবি, উড়োজাহাজটি রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ বহন করছিল। আর রাশিয়ার দাবি, এতে অন্তত ৬৫ ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিকে বিনিময়ের জন্য বেলগোরোদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। উভয় দেশের দাবি স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করে করে নিশ্চিত করতে পারেনি কোনও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ঘটনার পর পর দাবি করা হচ্ছিল, ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ইলিউশিন-৭৬ উড়োজাহাজকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। যদিও পরে এমন প্রতিবেদন মুছে ফেলা হয়েছে।

ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফকে উদ্ধৃত করে ইউক্রেনস্ক প্রাভদা ওয়েবসাইটের খবরে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি রাশিয়ার এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বহন করছিল। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে যুদ্ধবন্দিদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, এতে ৬৫ জন ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দি ছিলেন। এদের বন্দিবিনিময়ের জন্য বেলগোরোদ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাদের সঙ্গে উড়োজাহাজের ৬ রুশ ক্রু ও আরও তিন ব্যক্তি ছিলেন। উড়োজাহাজে থাকা সবাই  নিহত হয়েছেন।

রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভিয়াচেস্লাভ ভলোদিন অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনীয় যুদ্ধবন্দিদের বহনকারী উড়োজাহাজটি গুলি করে ভূপাতিত করেছে কিয়েভের সেনারা। তারা আকাশে নিজেদের সেনাদের গুলি করেছে। মানবিক মিশনে থাকা আমাদের পাইলটকেও গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।

অবশ্য নিজের এই অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ হাজির করেননি।

বেলগোরোদের আঞ্চলিক গভর্নর ভিয়াচেস্লাভ গ্লাডকভ বলেছেন, আঞ্চলিক রাজধানীর উত্তর-পূর্বে করোচানস্কি জেলায় সামরিক উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে। তদন্তকারী ও জরুরি সেবার কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।

রাশিয়ার পার্লামেন্ট সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আন্দ্রেই কারতাপলভ বলেছেন, উড়োজাহাজটি তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করেছে পশ্চিমারা।   

তিনিও নিজের তথ্যে কোনও সূত্র উল্লেখ করেননি। বলেছেন, তদন্তে জানা যাবে প্যাট্রিয়ট নাকিআইআরআইএস-টিএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

ইলিউশিন-৭৬ উড়োজাহাজের ফাইল ছবি

রুশ ইলিউশিন-৭৬ সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজটি সেনা, কার্গো, সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র আকাশ পথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। এতে সাধারণত পাঁচজন ক্রু থাকেন এবং এটি ৯৯ জন আরোহী বহন করতে পারে।

ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় বেলগোরোদ গত কয়েক মাস ধরে নিয়মিত ইউক্রেনীয় হামলার শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে গত বছর ডিসেম্বরে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছিলেন।

সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান