আইসিসির পরোয়ানা

নেতানিয়াহুকে হাঙ্গেরি সফরের আমন্ত্রণ জানাবেন অরবান

হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে হাঙ্গেরি সফরে আমন্ত্রণ জানাবেন। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে, তা হাঙ্গেরিতে মানা হবে না। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার আইসিসি গাজা সংঘাতে কথিত যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু, তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং হামাস নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

অরবান বলেন, আজ আমি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে হাঙ্গেরি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবো। সেই আমন্ত্রণে আমি নিশ্চিত করব যে, তিনি এলে হাঙ্গেরিতে আইসিসির রায়ের কোনও প্রভাব পড়বে না এবং আমরা এর কোনও শর্ত মানবো না।

হাঙ্গেরির রাষ্ট্রীয় রেডিওতে দেওয়া এক বক্তব্যে অরবান আইসিসির পরোয়ানাকে ‘ভুল’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু হাঙ্গেরিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আলোচনায় অংশ নিতে পারবেন।

২০১০ সালে জাতীয়তাবাদী ফিদেজ পার্টির হয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অরবান ও নেতানিয়াহুর মধ্যে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ২০১৭ সালে নেতানিয়াহু বুদাপেস্ট সফর করেছিলেন।

ইসরায়েলি নেতারা এবং হোয়াইট হাউস আইসিসির সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে। অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, আইসিসি রায় রাজনৈতিক নয় এবং ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত আদালতের সিদ্ধান্ত সম্মান ও বাস্তবায়ন করা।

ইইউয়ের মধ্যে হাঙ্গেরি ও চেক প্রজাতন্ত্র ইসরায়েলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, স্পেন ও আয়ারল্যান্ড ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে।

চেক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলবে। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেত্র ফিয়ালা আইসিসির রায়কে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেছেন। বৃহস্পতিবার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এই সিদ্ধান্ত আইসিসির অন্যান্য ক্ষেত্রে মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করে, কারণ এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে তুলনা করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইসিসির এই সিদ্ধান্ত ইইউ-এর ভেতরে মতভেদ আরও বাড়াতে পারে। একইসঙ্গে, অরবান ও নেতানিয়াহুর সম্পর্ক আরও গভীর করার যে উদ্যোগ চলছে, তা ইইউয়ের অভ্যন্তরীণ কূটনৈতিক অস্থিরতার কারণ হতে পারে।