ইসরায়েলি অবরোধে খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছানো অবস্থায় গাজা উপত্যকায় লুটপাটে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে হামাস। গাজায় ক্ষমতাসীন এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
হামাসের অভিযোগ, কিছু লুটেরা ইসরায়েলকে সহযোগিতায় কাজ করেছে। গাজায় ত্রাণ প্রবেশে দুই মাস ধরে বাধা সৃষ্টি করে রেখেছে তেলআবিব। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গাজা সিটিতে অপরাধীদের ধাওয়া করার সময় এক পুলিশ সদস্য ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত হন এবং আরও কয়েকজন আহত হন।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,এই বিশ্বাসঘাতকদের বিরুদ্ধে আমরা লৌহমুষ্টিতে আঘাত করব। যে কোনও মূল্যে তাদের দমন করা হবে। আমরা গাজাবাসীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে দেব না।
হামাসের তথ্য দফতরের পরিচালক ইসমাইল আল-সাওয়াবতা জানান, কিছু লুটেরা গোত্রভিত্তিক এবং কিছু সংঘবদ্ধ চক্র হিসেবে কাজ করেছে— যাদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি ইসরায়েলের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তার ভাষ্য, চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ‘বিপ্লবী মৃত্যুদণ্ড’ কার্যকর করা হয়েছে।
গাজা শহরের বাসিন্দা আহমেদ বলেন, এই সশস্ত্র দলগুলো শুধু খাবার লুট করেনি, রাস্তায় মানুষকে থামিয়ে তাদের অর্থ ও ফোন নিয়ে গেছে। এরা আমাদের অভুক্ত রাখার মাধ্যমে দখলদারদের সাহায্য করছে।
হামাসের ঘনিষ্ঠ বার্তা সংস্থা সাফা জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন করে ৫ হাজার সদস্যের একটি বাহিনী গঠন করেছে, যারা লুটেরা ও সশস্ত্র গ্যাং দমনে কাজ করবে। তবে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার কারণে স্থানীয় নিরাপত্তাবাহিনী কার্যক্রমে বারবার বাধার মুখে পড়ছে।
গত জানুয়ারিতে এক যুদ্ধবিরতির পর গাজাজুড়ে হাজার হাজার পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করেছিল হামাস। কিন্তু মার্চে ইসরায়েলের বড় ধরনের হামলা ফের শুরু হলে তাদের উপস্থিতি অনেকটাই কমে যায়।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলি অভিযানে প্রাণ গেছে ৫২ হাজার ৫০০-র বেশি ফিলিস্তিনির।