ব্রিটিশ বন্ধুকে বিয়ে করছেন মণিপুরের লৌহমানবী ইরম শর্মিলা

ইরম চানু শর্মিলাভারতের মণিপুরের লৌহমানবী বলে খ্যাত মানবাধিকার আন্দোলনের নেত্রী ইরম শর্মিলা আগামী জুলাই মাসে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। নিজের দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ বন্ধু ডেসমন্ড কুটিনহোকে বিয়ে করে শর্মিলা তামিল নাড়ুর কেরালায় বসবাস করবেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার তামিলনাড়ুর পেরুমাদামালাই থেকে ফোনে ইরম শর্মিলা বলেন, ‘আমাদের বিয়ের তারিখ এখনও নির্দিষ্ট করা হয়। তামিলনাড়ুতে জুলাইয়ের শেষে বিয়ের কথা চিন্তা করা হচ্ছে।’

ভারতের সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন আফস্পার বিরুদ্ধে টানা ১৬ বছর অনশন করে লৌহমানবী হিসেবে পরিচিতি পান শর্মিলা। মণিপুরে জন্ম নেওয়া শর্মিলা আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে ২০০০ সালের ২ অক্টোবর অনশন শুরু করেন। ১৬ বছরের অনশনের সময় তিনি একাধিকার কারাগারে গেছেন। তবে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। অনশনরত অবস্থায় নল দিয়ে জোর করে তাকে কারাগার ও হাসপাতালে খাওয়ানো হয়েছিল।

অনশন ভাঙার পর শর্মিলা ‘পিপলস রিসার্জেনস অ্যান্ড জাস্টিস অ্যালাইন্স’ নামের নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। দলটি এ বছর মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নেয়। শর্মিলা মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।  নির্বাচনে মাত্র ৯০ ভোট পেয়ে হতাশ শর্মিলা ভোটের রাজনীতি না করার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ বন্ধু ডেসমন্ডের সঙ্গে লন্ডনে গিয়ে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পাসপোর্ট করাতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন।

পরে শর্মিলা ডেসমন্ডকে বিয়ে করার জন্য তামিলনাড়ু যান। সেখানে পৌঁছেছেন ডেসমন্ডও। নিরাপত্তার কারণে নিজেদের ঠিকানা প্রকাশ করেননি তারা।

বিয়ের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শর্মিলা। তিনি বলেন, ‘আমি লড়াই চালিয়ে যাব। তবে রাজনীতিক হিসেবে নয়, একজন মানবাধিকারকর্মী হিসেবে। ভবিষ্যতে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছি আমি। বিয়ের পর আফস্পার মতো আইন বাতিলের জন্য আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান জানাব।’

ডেসমন্ড সম্পর্কে শর্মিলা বলেন, ‘ডেসমন্ডের পরিবার ভারতের গোয়ার বাসিন্দা ছিলেন। ডেসমন্ডের জন্ম হয়েছে তাঞ্জানিয়ায়। বিয়ের পরিকল্পনার বিষয়ে আমি এখনও পরিবারকে জানাইনি, মাকেও না। শিগগিরই জানাব। বিয়েতে বন্ধু-বান্ধব ও কয়েক শুভাকাঙ্ক্ষীকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।’ সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

/এএ/