কাশ্মিরে হামলার পর জম্মুতে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ-সহিংসতা, কারফিউ জারি

দক্ষিণ কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ’র গাড়িবহরে হামলায় অন্তত ৪৪ জওয়ান নিহতের ঘটনায় শুক্রবার জম্মুতে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্ষোভে উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে। পরে বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শহরটিতে কারফিউ জারি করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এখবর জানিয়েছে।

AP19046312574364

এক পুলিশ সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানায়, পাথর নিক্ষেপের সময় তিন যুবক আহত হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ১৫-২০ টি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ স্মোক সেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কিছুক্ষণ পরে আরও কিছু উত্তেজিত মানুষ স্থানীয় এমইএস সদরদফতরে পাথর নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে টিয়ারগ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিক্ষুব্ধরা অন্তত ৩০টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। একপক্ষ ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ ও ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ এবং অপরপক্ষ ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহ হু আকবর’ স্লোগান দেয়। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে বুঝতে পেরে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়ে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এর আগে শুক্রবার সকালে পাকিস্তানবিরোধী বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়। বেশ কয়েকটি সামাজিক, রাজনৈতিক ও বণিক সম্প্রদায়ের লোকেদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এরপরই সেখানে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর প্রায় ২৫০০ সদস্যকে নিয়ে ৭০টি গাড়ির একটি বহর জম্মু থেকে কাশ্মির যাচ্ছিলো। এরমধ্যে ৪৪ জন জওয়ানকে বহনকারী একটি বাসের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায় জয়েশ-ই-মোহাম্মদ সদস্যরা। প্রায় সাড়ে তিনশ’ কেজি বিস্ফোরক-ভর্তি গাড়ি নিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এতে ৪০ জনেরও বেশি জওয়ান নিহত হয়। আহত হয় আরও অনেকে। হামলার পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ। গোষ্ঠীটি কাশ্মিরে ভারতীয় শাসনের অবসান চায়। মতাদর্শগতভাবে কাশ্মিরকে পাকিস্তানের অঙ্গীভূত করার পক্ষে অবস্থান তাদের।