ভারতের নাগরিকত্ব আইন মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক: জাতিসংঘ

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ভারতের বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার কার্যারয়ের মুখপাত্র মুসলিমদের বাদ দেওয়ায় আইনটিকে মূলগতভাবে বৈষম্যমূলক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এখবর জানা গেছে।

191211135449-india-citizenship-02-exlarge-169

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল-সিএবি, ২০১৯-এ সম্মতি দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর বৃহস্পতিবার রাতে ওই বিলে সম্মতি দেন তিনি। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় গেজেট প্রকাশের মধ্য দিয়ে আইনটি কার্যকর হয়েছে।

মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে নিপীড়নের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব দিতে বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় বিলটি। পরে বুধবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভারও অনুমোদন পায়। বিরোধীদলগুলো বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ করলেও দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভিন্ন দাবিতে উত্তাল। আসাম-ত্রিপুরা, মেঘালয়ে শরণার্থীদের অবৈধ অভিবাসীর স্বীকৃতি বাতিল ও এই অঞ্চলকে সিএবি আওতামুক্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ করছে তারা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স জেনেভায় বলেছেন, ভারতের নতুন নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন ২০১৯ মূলগতভাবে বৈষম্যমূলক হওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন।

লরেন্স আরও বলেন, আমরা ধারণা করছি নতুন আইনটি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বিবেচনা করবে। আশা করি তারা আইনটিকে ভারতের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে।

উল্লেখ্য, সংশোধিত আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের অবৈধ শরণার্থী হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকার বলছে, এই আইনের মাধ্যমে প্রতিবেশি দেশগুলোতে নিপীড়নের শিকার হওয়া মানুষদের রক্ষা করা হবে। তবে বিরোধীদের দাবি, মুসলমানদের সুরক্ষার প্রশ্ন উপেক্ষিত থাকায় আইনটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে হেয় করেছে।