দৈনিক সংক্রমণের নতুন রেকর্ড ভারতের, মৃত সহস্রাধিক

ভারতে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বেড়েই চলেছে। শনিবার সকালে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও দুই লাখ ৩৪ হাজার ৬৯২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের ঘটনা। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৩৪১ জনের।

আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারস-এর হিসাব অনুযায়ী, ভারতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৬০৯ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দেশটির প্রায় সবগুলো রাজ্যেই দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজ্যে শনাক্তের নতুন রেকর্ড হচ্ছে। সংক্রমণের নিরিখে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। ভোটের মৌসুমে হু হু করে এ রাজ্যে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারি শেষ হয়ে গেছে মনে করে নেওয়া ভুল পদক্ষেপের মাশুল দিচ্ছে ভারত। ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ইমিউন সিস্টেম গবেষক ড. ভিনেতা বাল বলেন, দীর্ঘমেয়াদী মহামারির বিষয়টি কেউ গুরুত্ব দেয়নি।

সেপ্টেম্বরে যখন নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করলো অনেকেই সিদ্ধান্ত নিলেন মহামারি শেষ হয়ে গেছে। মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি সবাই ভুলে গেলেন। সরকারও ঝুঁকির বিষয়ে মিশ্র বার্তা দিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে যখন আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলো তখন কর্তৃপক্ষও দোটানায় পড়ে যায়। সরকারের দ্বিধামূলক অবস্থানের ফলে ঝুঁকি মোকাবিলায় ব্যর্থতা এসেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বেগজনক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে মাস্ক পরার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহ তিনি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিয়ে বড় বড় জনসমাবেশ করেছেন, যেগুলোতে লাখো কর্মী-সমর্থক মাস্ক ছাড়াই উপস্থিত হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দু ধর্মালম্বীদের উৎসব কুম্ভ মেলা জনগণকে সমবেত হওয়ার অনুমতি দেয়। গঙ্গা নদীতে কয়েক লাখ পুণ্যার্থী অংশ নেন। এই আয়োজন করোনার সুপারস্প্রেডারে পরিণত হতে পারে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে রাজ্যটির বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রী তিরাথ সিং রাওয়াত-এর দাবি, ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের ফলে ভাইরাসের ভয় দূর হবে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।