ভারতজুড়ে লকডাউনের তাগিদ আইএমএ-এর, মোদি সরকারের ভূমিকায় হতাশা

করোনাভাইরাসে ভারতে টানা তিন দিন ধরে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে। কোভিডের বাড়বাড়ন্তের প্রতিকার হিসেবে দেশজুড়ে পূর্ণ লকডাউনের সুপারিশ করেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। শনিবার এক বিবৃতিতে নিজেদের এমন সুপারিশের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে সংকটময় অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত উদাসীন মনোভাব ও অনুপযুক্ত পদক্ষেপ দেখে আমরা স্তম্ভিত।’

আইএমের অভিযোগ, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ কার্যত ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলেছে সরকার। মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা না বুঝেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

বিবৃতিতে আলাদা আলাদা রাজ্যে স্বতন্ত্রভাবে ১০-১৫ দিনের লকডাউনের বদলে দেশজুড়ে পূর্ণ লকডাউনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

আইএমএ বলছে, তাদের প্রস্তাব সত্ত্বেও লকডাউন করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ এখন প্রতিদিন চার লাখের বেশি করোনা শনাক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে অন্তত ৪০ শতাংশ রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ।

দেশজুড়ে অক্সিজেন সংকটের জন্যও মোদি সরকারকে একহাত নিয়েছে আইএমএ। সংস্থাটি বলছে, প্রকৃতপক্ষে ভারতে যথেষ্ট অক্সিজেন রয়েছে, কিন্তু বিতরণ ব্যবস্থায় ভুল হচ্ছে।

শুধু আইএমএ নয়, কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতা নিয়ে মোদি সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেট। জার্নালটি বলছে, বিপর্যয়ের সময় মোদি যেভাবে নিজের সমালোচনা দমনে উঠেপড়ে লেগেছিলেন, তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে মোদি সরকারের কোনও পরিকল্পনাই নেই। বিজেপি নেতাদেরও বক্তব্য মোটামুটি একই রকমের। তার মধ্যেই কোভিডের এই ধাক্কার পরেও যাতে মোদির জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ থাকে, তার স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ নিয়ে চিন্তিত তারা।

বিজেপি নেতারা মানছেন, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশজুড়ে মৃত্যুর মিছিল এবং তার সঙ্গে অক্সিজেন, টিকার অভাবের ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই আঙুল উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে মোদির ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার গ্রাফ নিম্নমুখী হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা মনে করছেন, রাজ্যের নির্বাচনে শেষ দুই-তিন দফার ভোটে কোভিড মোকাবিলায় কেন্দ্রের ব্যর্থতার খেসারত দিতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই সংকট উত্তরণে দেশজুড়ে লকডাউনের তাগিদ দিয়েছে আইএমএ। সূত্র: জি নিউজ।