বাংলাদেশে ফিরতে না পেরে কলকাতায় ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর মৃত্যু

বাংলাদেশে ফিরবার এনওসি না পেয়ে পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু হলো বগুড়ার ক্যান্সার আক্রান্ত শিশু আল হাসান রফিকের। মৃত শিশুর বাবা আব্দুল লতিফ তার মৃত সন্তানের লাশ নিয়ে কবে ফিরবেন দেশে তা নিয়ে আহাজারি করছেন কলকাতায়। অন্যদিকে, এনওসি বন্ধ হওয়ায় সোমবার কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ভারতে আটকে পড়া শতাধিক বাংলাদেশি।

আব্দুল লতিফ জানান, গত কয়েক বছর ধরে অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসা করাতে ভারতে যাতায়াত করছি। কয়েক মাস আগেও এসেছিলাম। আমার ছেলে রফিকের পেটে টিউমার হয়েছিল। ভেলোরে চিকিৎসা চলছিল। টাকা-পয়সা শেষ হয়ে যাওয়ায় জন্য কলকাতায় ফিরে আসি। এনওসি নিয়ে দেশে ফেরার জন্য।

সন্তান হারা বাবা জানান, ৫ মে থেকে তিনি কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে আবেদন করছেন। কোনও লাভ হয়নি। দেশে ফেরার আশায় অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে বেনাপোল সীমান্তের লাগোয়া ভারতের বনগাঁ আসেন। সেখানে গত রবিবার রফিক আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান তার মৃত্যু হয়েছে।

আব্দুল লতিফের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে কলকাতার বাংলাদেশ উপ–হাইকমিশনে দরবার করেও এনওসি পেলাম না। সন্তানকেও দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারলাম না। আপাতত তাকে হিমঘরে রেখে দেশে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার চেষ্টা করছি। জানি না মৃত সন্তানের লাশ কতদিন হিমঘরে রাখতে হবে।

এদিকে, কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ দেখানো বাংলাদেশি নাগরিকরা জানান, তাদের টাকা শেষ হয়ে গেছে। কলকাতায় থাকার জায়গা নেই। এ অবস্থায় দেশে না ফিরলে খাবার না পেয়ে, অসুস্থ হয়ে মরতে হবে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত এমন বহু মানুষও ছিলেন।

গাজিপুর থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে ভেলোরে এসেছিলেন ফেড্ররিক মুকুল বিশ্বাস। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু–বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের গাজিপুর মহানগর কমিটির সভাপতি। দেশে ফেরার বিষয়ে তিনি জানান, গত এপ্রিলে ব্রেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে ভেলোরে গিয়েছিলেন। সঙ্গে জামাই, নাতিও রয়েছে। টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনি মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতায় এসে আটকে পড়েছেন। এনওসিও দেওয়া হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্যান্সার আক্রান্ত মেয়ের চিকিৎসা কীভাবে করাবেন, তা নিয়ে তিনি উদ্বেগে।