ফিলিস্তিনের সমর্থনে গ্রাফিতি এঁকে গ্রেফতার কাশ্মিরি শিল্পী

ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাত দিন ধরে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে ফিলিস্তিনের গাজায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষেরা ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। কিন্তু জায়নবাদী আগ্রাসনের বিরোধিতা করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের রোষানলে পড়েছেন কাশ্মিরের এক ম্যুরাল শিল্পী মুদাসির গুল।

৩২ বছরের তরুণ শিল্পীর গ্রাফিতিতে ফুটে উঠেছিল গাজাবাসীর ওপর চলা ইসরায়েলের অত্যাচারের বর্ণনা। প্রকাশ্যে এমন প্রতিবাদ জানানোয় গ্রেফতার করা হয়েছে মুদাসিরকে। শুধু তিনিই নন, ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ করায় ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন মাওলানাও রয়েছেন।

শুধু ছবি আঁকার কারণে এই শিল্পী গ্রেফতার হওয়ায় হতবাক মুদাসিরের পরিবার। তার বোন মুজামিল ফেরদৌসের প্রশ্ন, যখন সারা বিশ্ব ইসরায়েলের নৃশংস অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব, তখন আমরা কথা বলতে পারি না, আমরা শিল্প অনুশীলন করতে পারি না, আমরা এ কোন ধরণের গণতন্ত্রে বাস করি? আমরা কি ফিলিস্তিনের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে পারি না?

কাশ্মীরিরা শুক্রবার জুমার নামাজের পর ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। পতাকা উড়িয়েছেন ফিলিস্তিনের। ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহতদের শান্তি কামনায় দোয়া করেছেন।

ফেরদৌস জানিয়েছেন, গত শুক্রবার কয়েকজন স্থানীয় মুদাসিরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাকে ফিলিস্তিনের সমর্থনে কিছু গ্রাফিতি এঁকে দিতে বলেন। কিন্তু সেখানে ভারতবিরোধী কোনও স্লোগান দেওয়া হয়নি। তবে কেন শুধু ফিলিস্তিনের সমর্থনে ছবি আঁকার জন্য তার ভাইকে গ্রেফতার করা হলো?

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মুদাসির তার গ্রাফিতিতে ফিলিস্তিনের পতাকা মাথায় জড়ানো এক নারীর ছবি এঁকে ছিলেন এবং সেখানে লেখা ছিল ‘আমরা ফিলিস্তিন’।

এতেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। এই ছবি দ্রুত ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেটিই পরে প্রশাসনের নজরে আসতেই গ্রেফতার করা হয় মুদাসিরকে।

মুদাসিরের বোন ফেরদৌসের অভিযোগ, তার ভাই একজন শিল্পী। সে শুধু তার কাজ করেছে। তারা চান না এভাবে সরকারের রোষের মুখে পড়ে তার ভাইয়ের জীবন নষ্ট হোক।

তিনি আরও জানান, মুদাসিরের শরীরিক কিছু সমস্যা রয়েছে। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘ দিন জেলবন্দি থাকলে তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।সূত্র: দ্য ওয়াল