ইংরেজি-হিন্দি ছাড়া অন্য ভাষা নয়: দিল্লির হাসপাতাল

কথা বলতে হবে কেবল হিন্দি ও ইংরেজিতে। নার্সদের প্রতি এমন নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির একটি সরকারি হাসপাতাল। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

সূত্রের খবর, দিল্লির গোবিন্দ বল্লভ পন্ত ইনস্টিটিউট হাসপাতালে আসা রোগী বা তার পরিবারের সঙ্গে মালয়ালম ভাষায় যোগাযোগ করেছিলেন এক নার্স। কর্মক্ষেত্রে আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ওই হাসপাতাল। নির্দেশনা জারি করে বলা হয়, ‘রোগী বা তাদের পরিবারের অধিকাংশ লোকই স্থানীয় ভাষা বোঝেন না। অসহায় বোধ করেন। তাই সব নার্সদের শুধু হিন্দি বা ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একজন নার্স বলেন, ‘হাসপাতালটিতে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জনের মতো নার্স রয়েছেন। আমরা সব সময় রোগীর সঙ্গে হিন্দিতে কথা বলি। তাদের সঙ্গে মালায়ালাম ভাষায় কথা বললে কিছু বুঝতে পারবে না। এখন কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা নিজেদের মধ্যেও মালায়ালাম ভাষায় কথা বলতে পারবো না।’

স্বভাবতই এই নির্দেশ নিয়ে আপত্তি রয়েছে হাসপাতালের নার্স সংগঠনের। সংগঠনটি বলছে, একজন রোগী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক নার্সের বিরুদ্ধে মালয়ালম ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন। তার জেরেই এই নির্দেশনা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই নির্দেশনা আঞ্চলিক ভাষাগুলোর জন্য অবমাননাকর।

দিল্লির নার্স ফেডারেশনও ওই নির্দেশনায় ব্যবহৃত শব্দগুচ্ছের সঙ্গে একমত নয়। গোটা ঘটনায় মানবধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী, শশী থারুর থেকে কে সি বেণুগোপালও ভাষা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

টুইটারে দেওয়া পোস্টে শশী থারুর লিখেছেন, ‌‘এটা ভাবতে পারছি না যে, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান নার্সদের নিজেদের মধ্যে মাতৃভাষায় কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি অমার্জিত, অপমানজনক আর ভারতীয় নাগরিকদের মানবাধিকারের লঙ্ঘন।

রাহুল গান্ধী লিখেছেন, মালায়ালাম ভাষা যে কোনও ভারতীয় ভাষার সমান। এই ভাষা বৈষম্য বন্ধ হোক। সূত্র: জি নিউজ, হিন্দুস্তান টাইমস।